বাংলাহান্ট ডেস্ক : যে বয়সে আর পাঁচজন কলেজ পড়ুয়া পড়াশোনা, গান, বাজনা ইত্যাদি নিয়ে সময় কাটাচ্ছে সেই সময় ভদ্রেশ্বরের তমা দত্ত মুখোমুখি চরম বাস্তবের। শ্রীরামপুর কলেজের বাংলা অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কুড়ি বছরের তমা। সংসারের দারিদ্রতা তাকে প্রতিনিয়ত দাঁড় করিয়েছে কঠিন বাস্তবের সামনে। একদিকে সংসার, অন্যদিকে কলেজের পড়াশোনা।
এই দুইকে সঠিকভাবে চালিত করার জন্য তমা বেছে নিয়েছে টোটো চালানোর কাজ। সকাল এমন কি রাত্রিবেলাও তমা মাঝে মাঝে বেরিয়ে পড়েন তার টোটো নিয়ে। পাশাপাশি সময় করে করছেন নিজের কলেজের পড়াশোনা। সামনেই তার ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা। এরফলে নিয়মিত টোটো নিয়ে বেরোতে পারছেন না তিনি। ফলে সংসারে শুরু হয়েছে টানাটানি।
তমা দত্ত চাঁপদানী পৌরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। মা, বাবা ভাই ও বোনকে নিয়ে একটি ছোট ভাড়া বাড়িতে সংসার তাদের। দারিদ্রতা ছিল প্রথম থেকেই। কিন্তু পরবর্তী সময় বাবার অসুস্থতার কারণে তিনি আর বের হতে পারেন না কাজে। করোনা মহামারীর সময় সংসারের অবস্থা আরও খারাপ হয়। এরপর বাধ্য হয়ে টোটো চালানোকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে তমা। কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরতে এখন একমাত্র টোটোই ভরসা কুড়ি বছরের এই যুবতীর।
বিষয়টি নিয়ে তমা জানিয়েছেন, উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর টোটো চালানো শুরু করে সে। সকালে কলেজ যাওয়ার আগে পর্যন্ত টোটো চালান তিনি। কলেজ থেকে ফিরে সন্ধ্যাবেলায় সারেন পড়াশোনা। রাতে নটা থেকে বারোটা পর্যন্ত ফের টোটো নিয়ে চলে তার জীবন সংগ্রাম। নিজের খরচের পাশাপাশি ভাই বোনের খরচও তাকে সামলাতে হয়। ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষার জন্য টোটো নিয়ে না বেরোনোয় সংসারের হাল ফের খারাপ হতে শুরু করেছে।