জুলাই মাস থেকে ভারতের উপর জ্বলজ্বল করবে ধুমকেতু, পুরো আকাশ হবে আলোকিত

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ এ যেন আগুনের (fire) ন্যায়, যা বর্ণনা করা কঠিন। যা বরফের মতো শীতল, যার দুরন্ত গতিবেগ। তার আলোর ঝলক কয়েক কিলোমিটার অবধি বিস্তৃত। আবার আছে দুটো লেজও। মহাশূন্যে একা, বিচ্ছিন্ন, সঙ্গীহীন হয়ে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সৌরমণ্ডলে নতুন ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে দিনকয়েক আগেই।

সে যেন সূর্যকে নিজের আপন ভেবে এতদিন তার চারপাশেই পাক খাচ্ছিল। এখন তার নজরে পড়েছে পৃথিবীতে। তারই মায়ায় একটু একটু করে এগিয়ে আসছে। যতই কাছে আসছে তার রূপের ছটায় ভরে উঠছে মহাকাশ। সে এক ধূমকেতু। পরিচয় সি/২০২০ এফ৩। নাম ‘নিওওয়াইস’ (NEOWISE) ।

3 31

সে যেন ডুমুরের ফুল, কালেভদ্রে দেখা দেয় তাকে। হুশ করে ভেসে আসে আবার ঠিকানা বদলে চলে যায় কোনও এক অজানার পথে। দূর তারামণ্ডল থেকে পথ হারিয়ে পৃথিবীর সৌরমণ্ডলের ঢুকে পড়ে বহু বছরে হয়ত একবার। যখনই তারা আসে সঙ্গে করে একরাশ বিস্ময় নিয়ে আসে। নাড়িয়ে দিয়ে যায় জ্যোতির্বিজ্ঞানীমহলকে।

মে মাসেই ‘সোয়ান’ নামে এক ধূমকেতু দেখা দিয়ে গিয়েছিল পৃথিবীর আকাশে। বিজ্ঞানীরা যাকে বলেছিলেন ‘রাজহাঁস।’ এবার উত্তর গোলার্ধের আকাশজুড়ে রাজকীয় আলো ছড়িয়ে দেবে নিওওয়াইস। পৃথিবী থেকে এখন তার দূরত্ব মাত্র ২০ কোটি কিলোমিটার।

2
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী ১২-১৩ জুলাইয়ের পর থেকে অগস্ট অবধি আকাশে আরও স্পষ্ট দেখা যাবে নিওওয়াইসকে। আগামী ২২-২৩ জুলাই পৃথিবীর মাথার উপর দিয়ে ভেসে যাবে। তখন সে থাকবে আরও কাছাকাছি, পাশাপাশি। মাত্র ১০ কোটি কিলোমিটার দূরে। আরও বেশি উজ্জ্বল ও স্পষ্ট দেখা যাবে তার রূপ। রাতের আকাশে আলোর মায়া ছড়িয়ে দিয়ে যাবে নিওওয়াইস।
এই ধুমকেতুর ঠিকানা সবার অজানা।
কেউ জানে না। পরিবার পরিজনেরও খোঁজ নেই। আচমকাই পথ ভুলে চলে এসেছে সৌরমণ্ডলের ঠিকানায়। মার্চ মাসেই এই অনাহুত অতিথির খোঁজ পেয়েছিল ‘ওয়াইল্ড-ফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে এক্সপ্লোরার’ (WISE) স্পেস টেলিস্কোপ।
পৃথিবীর ধারেকাছে হুটহাট চলে আসা গ্রহাণু বা মহাজাগতিক বস্তুকে শনাক্ত করাই এই ওয়াইস স্পেস টেলিস্কোপের কাজ। তার এই নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট মিশনেই ধরা দেয় নিওওয়াইস। ধূমকেতু তখন সূর্যের খুব কাছে। প্রায় সাড়ে চার কোটি কিলোমিটারের দূরত্বে।
1 56

নিওওয়াইসের পরিধি ৩০ কিলোমিটারের কম। এর শরীর তৈরি হয়েছে পাথর, গ্যাস আর বরফ দিয়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্যের কাছাকাছি সৌরবায়ু ও তড়িদাহত সৌরকণাদের সংস্পর্শে এসে এই গ্যাস ও বরফ উবে গিয়ে নতুন পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছে। দুটো লেজও গজিয়েছে যার একটি গ্যাসের ও অন্যটির ধুলোর।

সম্পর্কিত খবর