বাংলা হান্ট ডেস্ক : বাম-কংগ্রেস জোট (CPM Congress) পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) বেশ সফল। তার জলজ্যন্ত প্রমাণ সাগরদিঘী উপনির্বাচন (Sagardighi By Election)। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সাগরদিঘি মডেলের আবার কাজ করবে কি না তা নিয়ে চর্চা ছিলই৷ কিন্তু কংগ্রেসের জন্য কোনও আসন না ছেড়েই দুই জেলার জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল বামফ্রন্ট৷
একদিন আগেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ গত কাল থেকেই শুরু হয়েছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া৷ পঞ্চায়েত ভোটেও বাম-কংগ্রেস জোট হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছিলই রাজনৈতিক মহলে৷ এরই মধ্যে কংগ্রেসের জন্য কোনও আসন না ছেড়েই পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদ আসনগুিলতে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল বামের।
শুক্রবার বিকেলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ৬০টি আসনের জন্য প্রার্থী ঘোষণা করল জেলা বামফ্রন্ট। এ দিন সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ জানান, জেলা পরিষদের মোট ৬০টি আসনের মধ্যে ৫৫টি আসনে সিপিএম ও ৫টি আসনে প্রার্থী দেবে সিপিআই। কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আসন সমঝোতা হয়নি বলে জানিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ।
এদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও জেলা পরিষদের ৬৬টি আসনের মধ্যে ৬২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব৷ ফরওয়ার্ড ব্লক তিনটি, আরএসপি ও সিপিআই একটি করে আসনে প্রার্থী দেবে। বাকি আসনগুলিতে সিপিএম লড়াই করবে। বাকি চারটি আসনে প্রার্থীদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোট নিয়ে বামফ্রন্ট অথবা কংগ্রেস নেতৃত্ব এখনও নির্দিষ্ট কোনও অবস্থান জানায়নি৷ তবে দু দিন আগেই দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে সাগরদিঘি মডেলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ের পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত দুই দলের রণকৌশল কী হয়, নজর এখন সেদকেই৷
সাগরদিঘী বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছিলেন জোট প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। এর ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কংগ্রেস এবং সিপিএম অনেকটা অক্সিজেন পেয়েছিল। জেলায় জেলায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই এগচ্ছিলো বাম কংগ্রেসের জোট এক্সপ্রেস। কিন্তু কিছুদিন আগে বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ওলোট-পালোট হয়ে যায় রাজনৈতিক সমীকরণ।
কয়েক মাস ঘুরতে না ঘুরতেই কংগ্রেস প্রার্থীর শিবির বদলানোকে ভাল ভাবে নেয়নি সিপিএমের একাংশ। কংগ্রেসের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায় বামেদের অন্দরে। কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করে যে পদক্ষেপ করা হয়েছিল, তা কার্যত জলে গিয়েছে। কংগ্রেসের পাশাপাশি জোট সহযোগী হিসেবে বামেদেরও ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলেই মনে করে সিপিএমের একাংশ। ভবিষ্যতের কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা উচিত কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দলের মধ্যে।