বাংলাহান্ট ডেস্ক : এবার বড়সড় অভিযোগ উঠল রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী তথা প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে। চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করে তাঁকে দিয়ে পরিচারিকার কাজ করানোর অভিযোগে হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন এক আদিবাসী তরুণী। এমনকি জাত পাত তুলে তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই তরুণী।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা গ্রামের বাসিন্দা সবিতা লায়েক শিক্ষাগত যোগ্যতায় স্নাতক। অত্যন্ত কষ্ট করেই পড়াশোনা শিখেছেন দরিদ্র আদিবাসী পরিবারের মেয়ে সবিতা। গতবছর বিধানসভা ভোটের পরই কারিগরি শিক্ষা দপ্তরে তাঁর একটি অস্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করেন হুমায়ুন কবীর। কিন্তু অভিযোগ, সেই চাকরির নাম করে মন্ত্রীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করানো হত ওই তরুণীকে দিয়ে।
ওই তরুণী জানিয়েছেন, ‘ঘর ঝাঁট-মোছা, কাপড় কাচা, বাসন মাজা, তিন-চারটে কুকুরের মল পরিষ্কার সবই করানো হত আমাকে দিয়ে । কাজে সামান্য ভুল হলেই মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী নিচু জাত বলে গালিগালাজ করতেন। কোনও রকম নিয়োগ পত্রও দেওয়া হয়নি আমাকে দপ্তরের তরফে। কিন্তু আমার বেতন দেওয়া হত কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের অ্যাকাউন্ট থেকেই। একটা সময় আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন মন্ত্রী এবং তাঁর স্ত্রী৷ এরপর ২০২১ সালের ১০ অগস্ট কারিগরি দফতর থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয় যে, স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে এসেছি আমি।’
তরুণী আরও জানিয়েছেন, ‘আমি অপেক্ষা করেছিলাম যে আমাকে বোধহয় আবার কাজে যোগ দিতে ডাকা হবে। কিন্তু বহুদিন অপেক্ষা করার পরও কিছুই হয়নি। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। দাদু বিধানসভা ভোটে মন্ত্রীর জন্য অনেক খেটেছিলেন। জেতার পর আমার চাকরিটার জন্য দাদুই অনুরোধ করেন।’
সমস্ত অভিযোগই অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী। মেয়েটিকে বাড়িতে রাখার কথা অবশ্য স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আইন মেনেই মেয়েটিকে আনা হয়েছিল এবং দফতরে নন টেকনিক্যাল কনট্র্যাকচুয়াল ওয়ার্কার হিসেবে আমার বাড়ির অফিসে নিয়োগ করা হয়েছিল। ভিজিটরদের দেখাশোনা, চিঠিপত্র নথিভুক্ত করা ছিল ওর কাজ। পরিচারিকার কাজ ও করত না। একবছর কাজ করলে নিয়োগ পত্রও দেওয়া হত।’ ঘটনার জেরে যে শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে তা বলাই বাহুল্য। পুরো ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলেই জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।