বাংলাহান্ট ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরেই গৃহবধূর উপর চলছিল নির্যাতন। কিন্তু অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় দিনের পর দিন ফিরিয়ে দিয়েছে থানা। এহেন অভিযোগ নিয়েই শেষমেশ বাধ্য হয়েই জলপাইগুড়ির সিজেএম আদালতে মামলা দায়ের করেন রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের পুত্রবধূ পিঙ্কি রায়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই এবার নির্যাতিতা বধূকে ন্যায়বিচার দিল আদালত। বধূর অভিযোগ গ্রহণের জন্য কড়া নির্দেশ দেওয়া হল থানাকে। শুধু তাইই নয়, এই মামলার অগ্রগতি কতদূর তাও ১২ জুলাই জানাতে হবে আদালতকে।
জানা যাচ্ছে, ময়নাগুড়ির বাসিন্দা পিঙ্কির সঙ্গে ২০১৯ সালে বিয়ে হয় রায়গঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের ছেলে দিবাকর রায়ের। কিন্তু পিঙ্কির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপর শারিরীক এবং মানসিক অত্যাচার শুরু করে স্বামী এবং শাশুড়ি। বিধায়ক শ্বশুর সব জানলেও কখনওই প্রতিবাদ করেননি কোনও কিছুরই। উলটে দিনের পর দিন নিশ্চুপে ছেলেকেই সমর্থন করে গেছেন।
শেষমেষ স্বামী এবং শাশুড়ির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ২০২১ সালেএ জানুয়ারি মাসে রায়গঞ্জ থানায় বধূ নির্যাতনের মামলা করেন পিঙ্কি। কিন্তু অভিযোগ, শ্বশুর অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় সেই মামলা গ্রহন করেনি থানা। বদলে মামলাটিকে পাঠানো হয় লিগ্যাল এইড ফোরামে। কিন্তু ফল মেলেনি সেখানেও। সম্প্রতি আবারও রায়গঞ্জ থানার দ্বারস্থ হন বধূ। সেখানেও মামলা দায়ের করতে না পেরে তিনি যান পুলিশ সুপারের কাছে। সেখানেও সুরাহা না মেলায় শেষ অবধি আদালতেই অভিযোগ দায়ের করেন পিঙ্কি। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই অবিলম্বে থানাকে অভিযোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দিল আদালত।
নির্যাতিতা বধূ জানিয়েছেন, ‘আমার শাশুড়ি আমায় গালিগালাজ করতেন অশ্রাব্য ভাষায়। স্বামী মারধর করতেন। শ্বশুরমশাই সব জেনেও চুপ করে থাকতেন। আমি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে আমার নামে মিথ্যে অপবাদও রটান তিনি।’ শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যেতে চান না বলেই জানিয়েছেন পিঙ্কি। অন্যদিকে সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। তাঁর দাবি, ‘সামনেই পঞ্চায়েত ভোট৷ আমি যেহেতু বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তাই আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিরোধীরা। তারাই আবার নতুন করে প্ররোচনা দিচ্ছে পুত্রবধূকে।’