২৪ বছর পর বদলে যাচ্ছে ইতিহাস, এবার কংগ্রেস সভাপতি হচ্ছেন গান্ধী পরিবারের বাইরের কেও

বাংলা হান্ট ডেস্ক: দীর্ঘ ২৪ বছর পর গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হতে চলেছেন। দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এবার সভাপতি হওয়ার দৌড়ে সামিল থাকছেন না কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বারবার পরিবারতন্ত্র রাজনীতির অভিযোগ করে এসেছে শাসক দল বিজেপি-সহ আরও অনেকে। তাই তাদের তরফে এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আজ অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের নোটিশ দেওয়া হবে। একইসঙ্গে শুরু হবে নির্বাচন প্রক্রিয়া। এই পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অক্টোবরের ১৭ তারিখ ভোটদান হবে। ভোটের ফলাফল বেরোবে তার দু’দিন পর অর্থাৎ ১৯ অক্টোবর।

বুধবার দিল্লিতে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে তাঁদের বৈঠক চলে। উল্লেখ্য, আগামী কংগ্রেস সভাপতি পদের একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দী হলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষে গেহলট জানান, দলের সংগঠন মজবুত করার কাজ করবেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানান, দলের অন্দরের কর্মীরা যদি তাঁকে সভাপতি পদে দেখতে চান, তাহলে তিনি তাঁদের ফেরাবেন না।

শুক্রবার সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দিল্লিতে দেখা করতে আসছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওইদিন ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র বিশ্রাম দিবস হিসেবে পালিত হবে। কংগ্রেসের সাধারণ সচিব জয়রাম রমেশ বলেছেন, “আগামী ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ মনোনয়নের সময় ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন রাহুল। অন্যদিকে, দিল্লিতে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর সভাপতির পদে মনোনয়ন জমা দেবেন অশোক গেহলট।”

অন্যদিকে, অশোক গেহলট জানিয়েছেন, তিনি কোচিতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথা বলে তাঁর হাতে সভাপতির পদের লাগাম তুলে দেওয়ার শেষ চেষ্টা করবেন। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, অশোক গেহলট যদি কংগ্রেসের সভাপতি হয়ে যান, তাহলে রাজস্থানের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? ইতিমধ্যেই সচিন পাইলট সেই পদের দায়িত্ব নিতে চেয়ে নিজের অবস্থান আরও স্পষ্ট করছেন।

মঙ্গলবার কোচিতে রাহুলের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। অন্যদিকে, অশোক গেহলটও বুধবার দিল্লি হয়ে কোচিতে রাহুলের সঙ্গে দেখা করতে যান। একদিকে সচিন পাইলট রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। অন্যদিকে, এই পদের জন্য গান্ধী পরিবারের প্রথম পছন্দ হলেন অশোক গেহলট।

তাই মনে করা হচ্ছে, পাইলটকে সহজে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন না গেহলট। যদিও এ বিষয়ে কংগ্রেসের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতির কথা তুলে ধরেছিলেন সচিন পাইলট। তবে অশোক গেহলট তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে দিগ্বীজয় সিংহ জানান, গেহলট যদি কংগ্রেস সভাপতি হন, তাহলে তাঁকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে।

দিল্লিতে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পর অশোক গেহলট বলেন, “সময়েই বলবে আমি কোথায় থাকব। দল যেখানে চাইবে আমি সেখানেই থাকব। আমার কাছে পদটা জরুরি নয়। ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি শুধুমাত্র মনোনিত ব্যক্তিদের জন্যই প্রযোজ্য। কেউ চাইলে নির্বাচন লড়েও দু’টি পদে বহাল থাকতেই পারেন।”

প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীকে কংগ্রেস সভাপতি পদে দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে দলের তেলেঙ্গানা, পুদুচেরি ও পাঞ্জাব ইউনিটের তরফে। এছাড়াও, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, বিহার, তামিলনাড়ু এবং আরও কয়েকটি রাজ্যে কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির তরফেও রাহুলকে সভাপতি করার প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের আগামী সভাপতি কে হন, সেটাই দেখার।      

 

 

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর