বাংলাহান্ট ডেস্ক : পরিকল্পনা ছিল মহাজোটের। বিজেপি বিরোধী সকল শক্তিকে একত্র করে আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদি-শাহ জুটিকে রোখার এটাই একমাত্র পথ বলে মনে করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে এখন থেকেই কোমর বেঁধেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তাঁর আগে বিরোধী জোটের শক্তি পরীক্ষা করার সুযোগ হলো রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। আগামী ১৮ জুলাই দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছে ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তার আগে বিরোধী নেতা-নেত্রীদের একই সুতোয় বাঁধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উদ্দেশেই তাঁর দিল্লি সফর। আজই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে চলবে বিরোধী শক্তির বৈঠক।
গত শনিবারই দেশের ৮ অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী সহ ২২ জন বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ আহ্বান জানিয়েছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর সেই আহ্বানে কংগ্রেসের প্রথম সারির তিন নেতা যোগ দিতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশ ও রণদীর সিং সুরজেওয়ালা দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাব অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।
বেশ কয়েকদিন ধরেই জল্পনা শোনা যাচ্ছিল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য বিরোধী শিবিরের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার। যদিও একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর তিনি তাঁর দলকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের লড়াইয়ে নেই তিনি। তবে আগামিকালের বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
তবে জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার দিল্লি পৌঁছেই শরদ পাওয়ারের বাসভবনে উপস্থিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, সিপিএম-র তরফে কেউ উপস্থিত থাকছেন না এই বৈঠক। উপস্থিত থাকছেন না অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি এবং তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতিও থাকছে না বলে সূত্রের খবর। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থী নিয়ে আলোচনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা ১৫ জুনের বৈঠকে যোগ দেবে না সিপিএম। যদিও জানা যাচ্ছে বুধবার দিল্লির বৈঠকে বাম দলগুলির মধ্যে একমাত্র সিপিআই অংশ নেবে। সূত্রের খবর, অ-বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠকে আমন্ত্রণ না পেয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ এআইএমআইএম-র নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।
গত শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোট ৮ অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী সহ ২২ জন অবিজেপি নেতা-নেত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে.সি. রাও, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্ট্যালিন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান, আরজেডি সভাপতি লালুপ্রসাদ যাদব, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, আরএলডি নেতা জয়ন্ত চৌধরি, কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ.ডি. কুমারস্বামী। তবে সিপিএম এবং আম আদমি পার্টি এই বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় যাত্রা শুরু আগেই জোট বেশ বড় ধাক্কা খেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।