বাংলাহান্ট ডেস্ক : পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেই ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। তবুও কংগ্রেসের হাত ছেড়ে যে আম আদমি পার্টি কিংবা তৃণমূলে ভরসা রাখতে রাজি নন পিকে এবার নিজেই স্পষ্ট জানালেন সেই কথা। তাঁর দাবি, কোনও দল রাজ্যে যত বিপুল ভোটেই জিতুক না কেন, জাতীয় দল হয়ে উঠতে গেলে পেরোতে হবে অনেক পথই। যা এই মুহুর্তে কোনও মতেই সম্ভব নয় তৃণমূল বা আম আদমি পার্টির পক্ষে।
পিকের কথায়, ‘হয়ত কংগ্রেসকে চাঙ্গা করে তোলা কঠিন। তবে তার মানে এই নয় যে তৃণমূল বা আম আদমি পার্টি কালকে জাতীয় দলে পরিণত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হয়ত বা চেকলিস্টে থাকা বেশ কিছু বাক্সে টিক করছে আম আদমি পার্টি। তবে কিছু বাক্সে টিক পড়া এবং সবকিছুকে বাস্তবায়িত করা পুরোপুরি ভিন্ন দুটি বিষয়। গোয়া এবং উত্তরাখণ্ডেই আম আদমি পার্টির পারফর্ম্যান্স দেখুন। শুধু পাঞ্জাবেই আম আদমি পার্টির ঝড় বয়েছিল। ২০১৭ সালে আমি নিজে পঞ্জাব নির্বাচন সামলেছিলাম। কংগ্রেস বিরোধীদের আটকাতে সমর্থ হয়েছিল সেবার। পাঞ্জাবে এবার যেটা হয়েছে, তা হল লোকের বর্তমান ব্যবস্থার প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি হয়েছে। এবার সাধারণ ভাবে ভোট হয়নি সে রাজ্যে। এরম খুবই কম হয় যেখানে মুখ্যমন্ত্রী, সিনিয়র বাদল, ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সবাই একই সঙ্গে একই নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন। যাকে কোনও ভাবেই স্বাভাবিক বলা চলে না।’
কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারা কেন সহজ সেই হিসেবও দিয়েছেন ভোটকুশলী। তাঁর মতে, ‘আম আদমি পার্টির সম্প্রসারণ করা এবং কংগ্রেসকে পুনুরজ্জীবিত করা, দুই কাজই সমান কঠিন। তবে তাও আমি বলব যে কংগ্রেসকে পুনরজ্জীবিত করা বেশি সহজ হবে। আম আদমি পার্টি হল একজন সাংসদের দল। গত লোকসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টি পেয়েছিল মাত্র ২৭ লক্ষ ভোট। ভারত জিততে লাগে ২৫ কোটি ভোট। ১০০ গুণ বেশি ভোট পেতে হবে আপকে। আর কংগ্রেসকে ১০-১১ কোটি ভোট থেকে ২৫ কোটিতে নিয়ে যেতে হবে।’
পিকের আরও দাবি, ‘ তবে কংগ্রেসকে পুনরজ্জীবিত করা কঠিন হওয়ার মানে এই না যে কালকে আম আদমি পার্টি বা তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় দল হয়ে উঠবে। এদের জাতীয় দল হতে হলে আগামী বহু বছর ধরে অনেক কষ্ট করতে হবে। তাহলে গিয়ে তারা জাতীয় দল হতে পারবে।’
২০২৪ সালেই বিজেপিকে জোর টক্কর দেবে কংগ্রেস। তবে তার জন্য একপ্রকার পুণর্জন্মই নিতে হবে তাদের। দলের নীতি আদর্শ এক রেখে খোলনলচে বদলানোর কথাই বলেছেন পিকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে ১১ মার্চ একটি ট্যুইট করেন পিকে। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ভারত দখলের যুদ্ধ ২০২৪ সালেই লড়া হবে। কোনও রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে নয়।’ একই সঙ্গে তিনি আরও লেখেন, ‘সাহেব এই কথাটি খুব ভালো করেই জানেন। সেই কারণেই বিরোধীদের মানসিকভাবে দূর্বল করে দেওয়ার লক্ষ্যে এই নির্বাচনের ফলাফলকে ঘিরে এত মাতামাতি করা হচ্ছে। এই মিথ্যে প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না বা এই মিথ্যে প্রচারের অংশ হবেন না।’
তাঁর এই পোস্টের পর প্রায় একই সুর দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। জল্পনা শুরু হয় যে তৃণমূলের সঙ্গেই গাঁটবন্ধন হয়েছে আইপ্যাকের। চব্বিশে মমতার দিল্লি জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করেন রাজ্যবাসী। কিন্তু এদিনের এই বক্তব্যে একপ্রকার জল পড়ল সেই জল্পনার আগুনে। পিকের এহেন বক্তব্যে এই কথা একপ্রকার স্পষ্ট যে সেদিন তৃণমূল নয়, কংগ্রেসের দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা