তৃণমূল সমবায় জিততেই গ্রাহকদের টাকা তুলে নেওয়ার হিড়িক, আমানতকারীরা বলছেন ‘আস্থা নেই’

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ফেব্রুয়ারী মাসে সিঙ্গুরের (Singur) বাগডাঙা ছিনামোর কৃষি উন্নয়ন সমিতির সমবায়ের (Co-operative Bank) নির্বাচন হয়। বহু অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগের পর সেখানের ৫৭টি আসনের মধ্যে ৫৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে সবকটিতেই জয়ী হয় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool)। অন্যদিকে, বাকি চারটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় সিপিএম প্রার্থীরা।

নির্বাচনের প্রথম থেকেই সেখানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিরোধীরা অভিযোগ তোলে, বহিরাগতদের নিয়ে এসে ভোট লুঠ করেছে তৃণমূল। পাশাপাশি সমবায়ের সদস্যদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। সেই ভোটের ফলাফল সামনে এসেছে বেশ কিছুদিন। এখনও বোর্ড গঠন হয়নি। অন্যদিকে, নতুন বোর্ড গঠন হওয়ার আগেই আরেক কান্ড। শোনা যাচ্ছে সমবায়ের অনেক আমানতকারীই নিজেদের গচ্ছিত টাকা থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানেই উঠছে প্রশ্ন।

তবে কী তৃণমূল সমবায়ে ক্ষমতা লাভের পরই আমানতকারীদের এই পদক্ষেপ! জানা গিয়েছে, যে সকল গ্রাহকরা টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের অভিযোগ, সঠিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়নি সেখানে। শাসকদল ভোট লুঠ করে বোর্ড গঠন হয়েছে। সে কারণেই আস্থা হারিয়েছেন তারা। তাই নিজেদের টাকা তুলে নিচ্ছেন।

এই বিষয়ে সমবায়ের প্রাক্তন ডাইরেক্টর সুপ্রতিম বাগ বলেন, ‘যে ভাবে নির্বাচন হয়েছে, তাতে আমানতকারীদের মধ্যে একটা অবিশ্বাস জন্মেছে। নতুন প্রতিনিধিদের উপর বিশ্বাস রাখতে না পেরেই নিজেদের টাকা তুলে নিচ্ছেন। সেই টাকা অন্যত্র রাখছেন।” এরপর দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “বহু আমানতকারী একসাথে টাকা তুলে নেওয়ায় সমবায়ের ক্ষতি হচ্ছে। যদি নির্বাচন স্বচ্ছ হত, তাহলে আমরা হারলেও মানুষের বিশ্বাসটা বজায় থাকত।’

tmc flag

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছিনামোর সমবায়ে মোট আমানতকারীর সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। আমানতকারী এখনও পর্যন্ত পাঁচ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বলে দাবি প্রাক্তন ডাইরেক্টরের। টাকা তোলার বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন সমবায়ের ম্যানেজারও। তিনি বলেন, ‘যেসব সদস্য গ্রাহক ভোট দিতে পারেননি, তারা আমার কাছে লিখিত ভাবে জানিয়ে টাকা তুলে নেন। তাদের নতুন বোর্ডের প্রতি ভরসা নেই বলেই হয়তো টাকা তুলে নিচ্ছে’।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর