‘মারুন…লাগান…টিপুন’, বিজ্ঞাপনের নাম করে অশালীন ভাষায় হোর্ডিং, ধুন্ধুমার কাণ্ড ব্যাণ্ডেলে

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিজ্ঞাপনের নাম করে অশালীন শব্দ ব্যবহার করে লাগানো হলো পোস্টার। এবার সেই পোস্টারকে কেন্দ্র করেই দেখা দিল বিতর্ক৷ শুক্রবার সকালে দেখা যায় ব্যান্ডেল স্টেশনের সামনে সাবওয়ের উপর এবং চুঁচুড়া শহরের বেশ কিছু জায়গায় লাল রঙের বড় বড় হোর্ডিং আটকানো হয়েছে (Controversy over Decency of Language in name of advertising in Bandel)। সেই লাল রঙের হোর্ডিং-এ সাদা অক্ষরে বাংলা হরফে কিছু কথা লেখা রয়েছে, যেগুলির ইঙ্গিত যথেষ্ট অশালীন। যদিও দেখে বোঝা যাচ্ছে না এগুলি কিসের বিজ্ঞাপন। হোর্ডিংয়ে উপর লেখা নেই কোনও নামও। “নিখরচায় লাইন মারুন”, “লাইন মারতে শিখুন”, “লাইনে ঢুকতে টিপুন” অথবা “লাইনে ঢুকুন দাদা” র মত বাক্যগুলি চোখ টানছে মানুষের।

এই হোর্ডিং দেখে বিতর্কের ঝড় বয়ে গেছে ব্যান্ডেল চত্বরে । ব্যান্ডেল বিভিন্ন ভাষাভাষীর শহর হলেও বাংলা ভাষার প্রতি আমোঘ আকর্ষন সকলেরই রয়েছে। অন্যান্য ভাষাভাষি মানুষও এই ধরনের বিজ্ঞাপনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। এই স্টেশন থেকে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করতে আসে। তারাই বা কী শিখছে এইসব হোডিং দেখে প্রশ্ন তুলেছেন বয়স্ক মানুষদের একাংশ।

ব্যান্ডেলে নাট্যচর্চার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রঞ্জন রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি একজন নাটক জগতের ব্যক্তি হিসাবে, একজন মানুষ হিসাবে, একজন বাবা হিসাবে এর তীব্র নিন্দা করছি । বেশ কিছুদিন ধরেই সমাজের ভাষার পরিবর্তন হয়েছে। রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও মুখের ভাষা বদলে গিয়েছে । তার প্রভাব পড়ছে জন সমাজে। বর্তমান প্রজন্ম জানেনা কোথায় কোন ভাষা ব্যবহার করতে হয়। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় নজর দেয় না পাশ দিয়ে কোনও মা তার মেয়ে বা ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছে কিনা। এটা সামাজিক অবক্ষয়।’

চুঁচুড়া বইমেলার প্রধান উদ্যোক্তা গোপাল চাকী বলেন, ‘এই ধরনের বিজ্ঞাপন চায় চমক তৈরি করে আকর্ষণ করা। আর সেটা করতে গিয়েই এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বাংলা ভাষার মাধুর্য ক্ষতিগ্রস্ত তো হচ্ছেই। এটা একটা অপসংস্কৃতি।’

ব্যান্ডেল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রীতু সিং বলেন, ‘আমি ভালো করে বাংলা পড়তে পারিনা। তবে পড়ার পর ভাবছি আমি ঠিক পড়তে পারছি কিনা। মনে হয়েছে এই ধরনের শব্দ ব্যবহার না করাই ভালো। একটা স্টেশন বা সাধারণ মানুষের যাতায়াত যেখানে সেখানে মহিলা বাচ্চাদের মধ্যে এট কুপ্রভাব পড়বেই।’

হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার উপ পৌর প্রধান পার্থ সাহা বলেন, ‘গতকাল এই হোর্ডিং ছিল না। রাতারাতি টাঙানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখছি কারা এইস করেছে। দরকার হলে হোর্ডিং সরিয়ে দিতে বলব।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর