তুলসী মালা পরে আসা যাবে না বিদ্যালয়ে! ফতোয়া জারি করে বিপাকে বারাসতের স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: স্কুলে তুলসী কাঠের মালা পরে আসা যাবেনা এমন ফতোয়া জারি করে বিতর্কের মুখে পড়লেন বারাসতের (Barasat) নবপল্লী যোগেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তিনি একটি অডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন। যেখানে বলা হয়, স্কুলে তুলসী কাঠের মালা সহ কানে এবং গলায় কোনও অলংকার পরে আসা যাবে না।

বারাসতের (Barasat) স্কুলে জারি “ফতোয়া”:

এর পাশাপাশি, মোবাইল নিয়ে স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা। ছাত্রীরা যাতে সঠিক ইউনিফর্ম পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্কুলে আসে সেই বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। বারাসতের (Barasat) নবপল্লী যোগেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রানী দত্ত চক্রবর্তী। এমতাবস্থায়, তাঁর এই ফতোয়াই এখন উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ছাত্রীদের একাংশ প্রধান শিক্ষিকাকে সমর্থন করলেও স্কুলের সভাপতি থেকে শুরু করে অভিভাবকরা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করে এই ফতোয়ার সমালোচনা করেছেন।

Controversy begins at this school in Barasat.

এদিকে, গত শুক্রবার স্কুলগেটের (Barasat) বাইরে ছাত্রীদের প্রবেশের সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে কেউ তুলসী গাছের মালা পড়ে এসেছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখেন প্রধান শিক্ষিকা। এমতাবস্থায়, সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পরেই শুরু হয় বিতর্ক। বিষয়টি জানতে পেরেই স্কুলের সভাপতি চম্পক দাস প্রধান শিক্ষিকাকে রীতিমতো ধমক দিতে থাকেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ”কারোর ধর্মীয় ভাবাবেগে কোনও অবস্থাতেই স্কুল আঘাত করতে পারে না।” তিনি আরও জানান, “কেউ তুলসীর মালা পরে এলে স্কুলের পড়াশোনার কোনও ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।”

আরও পড়ুন: আমেরিকায় আমন্ত্রণ করেছিলেন ট্রাম্প! কেন প্রত্যাখ্যান করেন মোদী? কারণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী

যদিও, প্রধান শিক্ষিকা দাবি করেছেন, ”এই বিষয়টি যে যার মতো ব্যাখ্যা দিচ্ছে। আমি এরকম কিছু বলিনি এবং আমি কাউকে কোনও কিছু পরতে বারণও করতে পারি না। আমি শুধু এটাই বলেছি যে, এহেন যা পরা হচ্ছে তা যেন প্রকাশ্যে না আসে।” প্রধান শিক্ষিকা আরও বলেন, “অনেক ছাত্রীই আমাকে জানিয়েছে তারা তুলসীর মালা পরে এলে স্কুলে (Barasat) আসার সময়ে ভেতরে রেখে এসেছে। ফলে তা বাইরে থেকে দেখা যায় না। এছাড়াও, তুলসী কাঠের মালা ছিঁড়ে গেলে সমস্যা হতে পারে। ছোট ছোট পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়তে পারে। আমরা ওদের প্রতি যত্নশীল। তাই এই বিষয়টি বারণ করা হয়েছে। যারা এই প্রসঙ্গে অন্য কথা বলছেন তাঁরা ভুল বলছেন।”

আরও পড়ুন: IPL-এ হয়েছে খারাপ ফলাফল! তারপরেও KKR-এর এই কিংবদন্তিকে বড় উপহার দিল শাহরুখের দল

তবে, সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলের (Barasat) ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষিকাকে সমর্থন করে জানিয়েছে, “আমরা এই বিষয়টা সম্পূর্ণ সমর্থন করছি। স্কুলের তো একটা নিজস্ব পোশাক আছে। সেখানে তুলসীর মালা পরে আসাটা যেমন কাম্য নয়, ঠিক তেমনই হিজাব পরে আসাও নয়। কারণ, এগুলি প্রত্যেকটি নির্দিষ্ট ধর্মের চিহ্ন বহন করে। স্কুল সেগুলি প্রদর্শনের জায়গা নয়। স্কুলে আমাদের একটাই পরিচয় থাকে। সেটা হল আমরা সকলেই ছাত্রী।”

দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও:

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।