বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাড়ি তো নয়, যেন প্রাসাদ। বাড়ির মালিকের নামের চেয়েও এলাকায় বাড়িটির পরিচিতি বেশি। তাও যে সে নামে নয়, ‘কোটি টাকার বাড়ি’ বলেই এই বাড়িটিকে চেনেন স্থানীয় মানুষ। কথা হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুধাংশু মণ্ডলের বাড়ি নিয়ে।
এলাকায় দুঁদে নেতা হিসেবে পরিচিত সুধাংশু মণ্ডল। এককালে ছোট একখানা ওষুধের দোকান থেকে আজ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। লটারি নয়, তাঁর কপালে জ্যাকপট এনেছিল ভোটের টিকিট৷ চারবারের কাউন্সিলর ছাড়াও একবার উপ পুর প্রধানও হয়েছেন তিনি। সেই নেতার প্রাসাদোপম বাড়িকে ঘিরেই এবার তুঙ্গে বিতর্ক।
সাম্প্রতিক কালে সামনে এসেছে তৃণমূল নেতাদের বিপুল সম্পত্তি এবং প্রাসাদতুল্য বাড়ির একাধিক ছবি। সেই তালিকায় নতুন সংস্করণ এই বাড়ি। এক বিঘা জমির উপর ১০ কাটা জুড়ে যেন একখানা আস্ত প্রাসাদ। স্থানীয় এবং বিরোধীদের দাবি আয়ের সঙ্গে নাকি ব্যায়ের সামঞ্জস্য নেই তাঁর। তবে নিজের সম্পত্তির হিসেব নিয়ে অবশ্য রাখঢাক করেন না এই তৃণমূল নেতা।
বাড়ি এবং সম্পত্তির বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে দিব্যি অপকট তিনি। বাড়ির বিষয়ে তাঁর দাবি, ‘পুরনো দোতলা বাড়িটা ভেঙে পড়ছিল। মা চেয়েছিলেন, একটা ঠিকঠাক বাড়ি যেন দাঁড় করাতে পারি। ওঁর কথা রাখতেই হাজার সাতেক বর্গফুটের বাড়িটা করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিরোধীরা এমন অনেক কথা বলে। সততার জন্যই মানুষ আমাকে চারবার ভোটে জিতিয়ে কাউন্সিলর করেছেন। মানুষটা আমি শৌখিন প্রকৃতির। প্রথমে কংগ্রেসের হয়ে, পরে তৃণমূলের হয়ে সাতাশ বছর ধরে রাজনীতি করছি। একটা বাড়ি, কিছুটা জমি আর ছেলের জন্য একটা গাড়ি বই আর কিছুই তেমন করিনি!’
নিজের রোজগারের ব্যাপারেও সাফাই দিয়েছে ওই নেতা। তাঁর দাবি, ‘বাবার সরকারি চাকরি ছিল। অবস্থা কোনও দিনই আমাদের খারাপ নয়। তা ছাড়া, স্ত্রীর খামারে ১১ হাজার মুরগি আছে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের ঠিকাদারির লাইসেন্স আছে। সেখানেও কাজে হাত লাগাতে হয় আমাকে। কাজেই মানুষের কাছ থেকে তোলাবাজি করে বাড়ি তৈরি করার দরকার পড়েনি।’
কাউন্সিলরের হাজার দেড়েক টাকা ভাতায় যে ঠাট বাট কিছুই চলতে পারে না, সেকথাই সাফ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, সবই বিরোধীদের মিত্যা প্রচার। তাঁর সততাকে পছন্দ করেন মানুষ। যদিও তৃণমূল কাউন্সিলরের এই দাবি মানবে নারাজ বিরোধী শিবির। বিরোধীদের অনড় দাবি, কাটমানি ছাড়া একটা ছোট ওষুধ দোকান থেকে এহেন পেল্লায় বাড়ি হাঁকানো অসম্ভব। যদিও এসবে মোটেই কান দেন না, এমনটাই জানিয়েছেন সুধাংশু মণ্ডল।