বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাজনৈতিক কারণে একাধিকবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে কোচবিহারের শীতলকুচি। সীমান্ত লাগোয়া এলাকা শীতলকুচির মানুষজনদের মধ্যে দারিদ্রতা বেশ বেশি। আকাশ আলম এই এলাকারই বাসিন্দা। আকাশের বাবা একজন পরিযায়ী শ্রমিক। মা গৃহবধূ। এক বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।
আকাশের পরিবারের আর্থিক অবস্থা মোটেও সুবিধার ছিল না। আকাশ এবিএন শীল কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক হন ২০২২ সালে। সংসারের অবস্থা খারাপ থাকার কারণে পড়াশোনার পাশাপাশি আকাশ মুড়ির দোকান খোলেন। সেই আকাশ আইআইটি জ্যাম সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষায় গোটা দেশের মধ্যে ১১৭ র্যাঙ্ক করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন।
আরোও পড়ুন : ১০০ শতাংশ বেশি মারাত্মক কোভিডের থেকেও! ভয় ধরাচ্ছে ব্লার্ড ফ্লু, সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত বিজ্ঞানীরা
আকাশ জানিয়েছেন, তিনি রাস্তার ওপর অস্থায়ী দোকান করে বিক্রি করেন মুড়ি। যখন ক্রেতাদের ভিড় থাকত না তখন বই খুলে পড়াশোনা করতেন। আকাশের দোকান শুরু হয় সকাল ১১ টায়। দোকান খোলার আগে পর্যন্ত পড়াশোনা করতেন। দোকান থেকে ফিরে এসে ফের ডুব দিতেন পড়াশোনায়। ইচ্ছা শক্তির জোরে হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন আকাশ।
আরোও পড়ুন : বীরভূমের রাস্তায় গড়াগড়ি মদ্যপ পুলিশ কনস্টেবলের! মুখে কেষ্ট নাম, দেখা মাত্রই সহকর্মীরা বললেন…
গত ২২ শে মার্চ প্রকাশিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি জয়েন্ট এডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্সে তাই নজরকারা সাফল্য পেলেন তিনি। সর্বভারতীয় স্তরের এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে গত ২২ শে মার্চ। ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় গোটা দেশে আকাশের র্যাঙ্ক ১১৭। চলতি বছর এই পরীক্ষার আয়োজন হয় গত ১১ই ফেব্রুয়ারি।
এই পরীক্ষায় অংশ নেন মোট ১৪১৪৬ জন পরীক্ষার্থী। এখন আকাশের স্বপ্ন মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজিতে পড়াশোনা করা। আকাশের মা রোশনারা বিবি জানাচ্ছেন, বিদ্যাসাগর শিশুনিকেতন থেকে আকাশের পড়াশোনা শুরু। তারপর বড় মরিচা দেলোয়ার হোসেন উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে সে।
এবিএন শীল কলেজ থেকে ৮৯.৬৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয় স্নাতক। তবে আকাশকে ভাবিয়ে তুলছে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা। এই অবস্থায় আত্মীয় বা অন্যদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পেলে বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করতে সুবিধা হবে তার। সব মিলিয়ে বলা যায় তার সাফল্যের জন্যই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে আকাশ।