বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাথমিক নিয়োগে (Primary Recruitment Scam) কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি! এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফ থেকে একাধিকবার আদালতে এই দাবি করা হয়েছে। এই মামলায় নাম জড়িয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ (Partha Chatterjee) একাধিক হেভিওয়েটের। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকার নগদ ও সম্পত্তি! এই দুর্নীতি-তদন্তে কার থেকে কত টাকার হদিশ মিলেছে, এবার চার্জশিট দিয়ে সেটাই জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Primary Recruitment Scam) বিরাট মোড়!
প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় এখনও অবধি দুর্নীতির পরিমাণ ১৫১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। ইডির (Enforcement Directorate) চার্জশিটে এমনটাই দাবি করা হয়েছে বলে খবর। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে নাকি ‘অপা’ তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মাধ্যমে!
২০২২ সালে অর্পিতার আবাসনে হানা দিয়ে গয়না এবং টাকার ‘পাহাড়’ উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা নিয়ে সেই সময় জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। চার্জশিটে ইডির (ED) দাবি, পার্থ-অর্পিতা মিলিয়ে দুর্নীতির অঙ্ক ১০০ কোটি টাকা অতিক্রম করে গিয়েছে। এখনও অবধি ‘অপা’র ১০৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ও নগদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে…! ‘নাতনি’কে ধর্ষণ! বৃদ্ধকে ২০ বছরের কারাদণ্ড আদালতের
জানা যাচ্ছে, প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Primary Recruitment Scam) মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ৫৪। এর মধ্যে যেমন ব্যক্তি রয়েছেন, তেমনই রয়েছে একাধিক সংস্থার নাম। পার্থ-অর্পিতা ছাড়াও এই মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এরপর তাঁর স্ত্রী শতরূপা এবং ছেলে শৌভিকের নামও জড়ায় এই মামলায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে জানানো হয়েছে, মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারের ৭ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকার খোঁজ মিলেছে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির দেওয়ার চতুর্থ সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে উঠে এসেছিল লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের (Leaps and Bounds) নাম। সেখানে যদিও এই সংস্থাকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়নি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, উক্ত সংস্থার অধীন থাকা ৮টি সম্পত্তি এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। সেগুলির বর্তমান বাজারদর ৭ কোটি ৪৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩৪২ টাকা। সেই সঙ্গেই তল্লাশি চালিয়ে খোঁজ পাওয়া গিয়েছে নগদ ৭৬ লক্ষ ১২ হাজার টাকার। ইডির তরফ থেকে বেশ কিছু জমি এবং সম্পত্তির কথাও তুলে ধরা হয়েছে বলে খবর। এছাড়া পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটেও লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের উল্লেখ করেছে ইডি। সেখানে দাবি করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থার ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার অস্থাবর সম্পত্তিও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
হাইপ্রোফাইল এই মামলার (Primary Recruitment Scam) তদন্ত এগোনোর সঙ্গেই একাধিক এজেন্টের খোঁজ পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। কুন্তল ঘোষ, অয়ন শীল, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়দের নাম উঠে আসে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই ৩ জনের দুর্নীতির পরিমাণ ১৫ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। এছাড়া ইডির চার্জশিটে ইম্প্রোলাইন কনস্ট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি সংস্থার নামও রয়েছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, ওই সংস্থার মাধ্যমে ১৩ কোটি ৫৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৬৭৭ টাকা নয়ছয় করা হয়েছে।