ঘুরে যাবে তদন্তের মোড়, করমণ্ডল কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য রেলের হাতে! শুনে আঁতকে উঠবেন

বাংলা হান্ট ডেস্ক : তীব্র গতিতে মেইন লাইন দিয়ে আসা ট্রেনটি হঠাৎ করেই লুপ লাইনে চলে গিয়ে ধাক্কা মারল মালগাড়িতে। তারপর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল কামরাগুলি। ভয়াবহ করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Accident) দুর্ঘটনার এই ছবি দেখে এখনও শিহরিত দেশবাসী। এবার এই দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে উঠে এল একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

নিছক যান্ত্রিক গোলযোগ নয়, বরং সম্ভাবনা রয়েছে তীব্র অন্তর্ঘাতের। প্রাথমিক তদন্তের পর এমনই দাবি রেলমন্ত্রকের। সোমবার বাহানাগায় দুর্ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখার পর রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, সিগন্যালিং ব্যবস্থা (Signaling system) নষ্ট (tampered) না করলে সিগন্যাল কখনই সবুজ হয় না। শুধু তাই নয়, সিগন্যালিংয়ে অন্তর্ঘাতের (sabotage) সঙ্গেই ইন্টারলক সিস্টেমে (Inter-lock system) গোলমালের দাবিও করেছেন রেলের তদন্তকারী আধিকারিকরা।

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সিগন্যালিং সমস্যার জন্যই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, সিগন্যালিং সিস্টেমে গণ্ডগোল কি নিছক যান্ত্রিক ত্রুটি? সন্দেহ দেখা দিয়েছে এখানেই। এরপরই রেলের পক্ষ থেকে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বে জোর দেওয়া হচ্ছে। সোমবার দুর্ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে রেলের তদন্তকারী আধিকারিকরা জানান, দুর্ঘটনার সময় করমণ্ডল এক্সপ্রেস আপ মেইন লাইনে যাওয়ার জন্য সিগন্যাল সবুজ ছিল। কিন্তু, তারপরই সিগন্যাল অফ করে দেওয়া হয়। ফলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে চলে যায় এবং মালগাড়িতে ধাক্কা মারে। সিগন্যালিংয়ের এই গণ্ডগোলের পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে বলেই তাঁদের দাবি।

coromandel

রেলের এক আধিকারিক সাংবাদিকদের জানান, ‘এই সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল বলেই গতকাল থেকে রিলে রুম বন্ধ করে রেখেছে। কারণ কোনও ত্রুটি হয়েছে কিনা তা একমাত্র ওই রিলে রুমে থাকা হার্ডওয়্যারের মাধ্যমেই জানা যাবে। ওই ঘরে সিগনালিং এবং টেলি কমিউনিকেশনের সব কাজ হয়। তাই অন্তর্ঘাত তো হয়েছেই।’

সিগন্যালিংয়ের যান্ত্রিক ত্রুটির দাবি ন্যাসাৎ করে দিয়ে তিনি বলেন ‘এই সিগন্যালিং ব্যবস্থা কিছুদিন আগেই মেরামত করা হয়। সেখানে এই ধরনের বিপর্যয় ঘটে কীভাবে? একটা সিগন্যালিং ব্যবস্থা এতটাই স্পর্শকাতর হয় যে, তার ত্রুটি মেরামত করার পর অন্তত ছয় থেকে সাতবার উন্নতমানের মেশিন এনে পরীক্ষা করা হয়। সেখানে এত কম সময়ে বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কার্যত ০.০১ শতাংশ।’

সিগন্যালিংয়ে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বের পাশাপাশি ইন্টারলক সিস্টেমে গোলমালের কথাও তুলে ধরেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। ওই আধিকারিকের দাবি, বাহানগা বাজার স্টেশনের যে ইন্টারলকিং সিস্টেম, তা উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন। এমনকি, বালেশ্বর বা কটকের মতো স্টেশনেও বাহানাগা বাজার স্টেশনের মত উন্নতমানের এই প্রযুক্তি নেই। সেগুলি সেমি-উন্নতমানের প্রযুক্তি। তাই অন্তর্ঘাত না হলে এই ধরনের দুর্ঘটনা হওয়া অসম্ভব।’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধেয় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙালুর হামসফর এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৭৫। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০০। কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল সেই নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে রেল সুরক্ষা কমিশন। তবে তদন্ত শেষ করতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে বলে জানাল রেল কর্তৃপক্ষ।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর