বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত দু’বছর ধরে অদৃশ্য মারণ ভাইরাস করোনা রীতিমত দাপট দেখিয়েছে সমগ্র বিশ্বজুড়ে। পাশাপাশি, এর জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় সবকিছুই। এমনকি, এই ভয়াবহ ভাইরাসের জেরে প্রাণও হারাতে হয় বহু মানুষকে। ইতিমধ্যেই করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের রেশ কাটিয়ে ক্রমশ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন।
তবে, এখনই মিলছেনা স্বস্তি। বরং, বর্তমানে পাল্লা দিয়ে করোনা দাপট দেখাচ্ছে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিনে। একটা সময়ে যে চিন থেকে উৎপত্তি হয় করোনার সেখানেই এখন করোনার জ্বালায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ। এমনকি, সেখানে ফের শুরু হয়েছে লকডাউনের আবহও।
মূলত, করোনার নতুন এই আক্রমণে চিনের অন্যতম জনবহুল শহর সাংহাইতে পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এদিকে, প্রশাসন লকডাউন ঘোষণা করায় প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ কার্যত গৃহবন্দী অবস্থায় ফিরে গেছেন। সংক্রমণ এড়াতে শহরের সব সুপার মার্কেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। এমনকি, অবস্থা এতটাই বেগতিক যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যার ফলে বাসিন্দারা খাদ্য ও পানীয়ের জন্য কার্যত আকুল হয়ে উঠেছেন।
এই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, “বুধবার চিনের অন্যতম বিত্তশালী শহর সাংহাইতে বাসিন্দারা খাবার ও পানীয়ের জন্য রীতিমত সংঘর্ষ করছেন। করোনার জেরে লকডাউনের কারণে ২ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। এমনকি, শহরের সব সুপার মার্কেট বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”
যদিও, সাংহাই শহরে এর আগেও ক্রমবর্ধমান করোনার কারণে শহরটিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবে, গত কয়েক দিনে করোনার ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। প্রশাসন কঠোর নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছে যে, যতক্ষণ না পর্যন্ত শহর জুড়ে সমস্ত নমুনা নেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ বিধিনিষেধ অপসারণের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে না।
এদিকে, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে সাংহাই শহরে, করোনা আক্রান্ত শিশুদের তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছিল। এমনকি সেই কেন্দ্রের তথ্যও অভিভাবকদের দেওয়া হচ্ছিল না। তবে এখন এই বিষয়ে কিছুটা শিথিল হয়ে শিশুদের বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল অর্থাৎ মঙ্গলবার, শুধুমাত্র সাংহাই শহরেই ১৬,৭৬৬ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এর আগে ৪ এপ্রিল ১৩,০৮৬ জন করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছিল। অর্থাৎ, ক্রমশ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।