করোনা কেড়ে নিয়েছে স্বামীর প্রান, অভাবের তাড়নায় ২ সন্তান নিয়ে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ স্ত্রীর

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ শিলিগুড়িতে (Siliguri) করোনা আক্রান্ত হয়ে শিক্ষক স্বামীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার পরই দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন স্ত্রী। ঘটনাটি মঙ্গলবার ঘটেছে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। গুরুতর আহতাবস্থায় দুই সন্তানসহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী।

 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনের একটি ফুট ওভারব্রিজ থেকে ৪ বছর ও ২ বছরের দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে রেললাইনে ঝাঁপ দেন ৩৫ বছরের এক নারী।

coronavirus 4972480 1280

আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের তিনজনকে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের পরিচয় জানা যায়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই মহিলার নাম সীমা মাহাতো। তার দুই শিশুকন্যা প্রাপ্তি ও ঋষিতা। তারা চম্পাসারির নিবেদিতা রোডের বাসিন্দা।

তদন্তে জানা যায়, সীমার স্বামী খড়িবাড়ির রামজীবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। স্কুল বন্ধ থাকায় তিনি বাড়িতেই ছিলেন। এ মাসের গোড়া থেকে সর্দিজ্বরের মতো উপসর্গ দেখা যায় তার শরীরে। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি শিলিগুড়ি মহকুমা হাসপাতালে যান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয় এবং পরে কোভিড পরীক্ষার পর ৩ জুলাই তার করোনা পজিটিভ আসে। তাকে কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষকের হৃদরোগ ছিল। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্টের জন্য তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সোমবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার ভোরবেলা হাসপাতাল থেকে স্বামীর মৃত্যুর খবর পান সীমা।

g

তার প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ উদভ্রান্তের মতো দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন সীমা। প্রতিবেশীরা তাকে বাধা দেয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি কারও কথা না শুনে একটি অটো ভাড়া করে উঠে পড়েন। ঘটনার পেছনে স্বামীর মৃত্যু ও অর্থনৈতিক সংকট কতটা দায়ী তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।


সম্পর্কিত খবর