বাংলাহান্ট ডেস্ক : নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নাম জড়ালো বিজেপির। কল্যাণী এইমসে (Kalyani AIIMS) চাকরি দুর্নীতির ঘটনায় প্রকাশ্যে এল নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর (Mukutmani Adhikari) নাম। তিনি বর্তমানে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যও। আর এই ঘটনা ঘিরেই বেশ বিপাকে বঙ্গ বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। জানা যাচ্ছে, এইমসে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এক ব্যক্তির থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন মুকুটমণি।
হবিবপুরের বাসিন্দা এক যুবক মুকুটমণির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে রানাঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মুকুট জানান, তাঁদের কর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। মিথ্যে অভিযোগ করে তাঁর নামে কুৎসা রটানো হচ্ছে। এই বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কল্যাণী এইমস নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠে আসছে। যেভাবে কারও মেয়ে, কারও পুত্রবধূকে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে, তার গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত হওয়া উচিত। এখন আবার টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগও আসছে। বিজেপি যদি একটা কল্যাণী এইমস নিয়ে এই করে, তাহলে আর একটু সুযোগ পেলে বা অন্য রাজ্যে যেখানে ক্ষমতায় আছে, সেখানে কী করছে!’
অভিযোগকারী ওই যুবক তাঁর অভিযোগপত্রে লেখেন, বিধানসভা ভোটের আগে মুকুমণির সঙ্গে তাঁর আলাপ। পরে মুকুটমণি তাঁকে জানান, এইমসে গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদে তিনি নিয়োগ করিয়ে দিতে পারেন। তবে তার জন্য ১০ লক্ষ ও ৮ লক্ষ করে টাকা লাগবে। যুবকের অভিযোগ, তিনি তাঁর দোকান বিক্রি করে আড়াই লক্ষ টাকা জোগাড় করে মুকুটমণিকে দেন। প্রতিশ্রুতি দিলেও মুকুটমণি পরে আর তাঁর সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ করেননি।
চাকরি দুর্নীতির ঘটনায় ইতিমধ্যেই একাধিক বিজেপি নেতার নাম জড়িয়েছে। বিজেপির গয়েশপুরের এক নেত্রী জানান, এইমসে চাকরি করিয়ে দেওয়ার নাম করে দলের এক সাংসদ টাকা চেয়েছিলেন। এরপরই ওই নেত্রীকে পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়। এইমস নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে কল্যাণীর এক বিজেপি কর্মী অমিত শাহের (Amit Shah) কাছে ইমেল করে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান।
কল্যাণী থানায় এক বিজেপি নেতার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে এইমসে চাকরি দেওয়ার অভিযোগও জমা পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যখন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক তথ্য সামনে আসছে, তখন নজর ঘোরাতেই এই ষড়যন্ত্র করা হতে পারে।’ তবে এবার এই এমস দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে কতদূর জল গড়ায় সেটাই এখন দেখার।