ভর্তি হতে পারেননি IIT তে! ইউটিউবে সফল হয়েই বেকারদের চাকরি দিচ্ছেন “টেক বার্নার”

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় ইউটিউবের দুনিয়ায় “টেক বার্নার”কে চেনেন না এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া মুশকিল! নিত্যনতুন স্মার্টফোনের পাশাপাশি একাধিক বৈদ্যুতিক গ্যাজেটের পর্যালোচনা করতে দেখা যায় তাঁকে। স্বাভাবিকভাবেই, আট থেকে আশি সকলেই পছন্দ করেন তাঁর ভিডিও।

২৫ বছর বয়সী এই ইউটিউবারের নাম শ্লোক শ্রীবাস্তব। তবে, নেটমাধ্যমে তিনি “টেক বার্নার” নামেই বেশি পরিচিত। বর্তমানে ইউটিউবে তাঁর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে চুয়াত্তর লক্ষের কাছাকাছি। তাঁর চ্যানেলের প্রায় প্রতিটি ভিডিওই দেখেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। তবে, বর্তমানে তুমুল জনপ্রিয় হলেও তাঁর এই সফলতার রাস্তা কিন্তু খুব একটা মসৃন ছিল না!

শ্লোক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর, তিনি আইআইটি-তে ভর্তির জন্য কোচিংয়ে যোগ দেন এবং কঠোর পরিশ্রম করেন। যদিও, শেষপর্যন্ত আইআইটিতে ভর্তি হতে ব্যর্থ হন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “ব্যর্থতার পর সেই সময়টা আমাদের জন্য খুবই কঠিন। ব্যর্থতা আমাদের এতটা ভাঙে না, যতটা মানুষের চোখে নিজেরা ভেঙ্গে যাই।”

তারপর তিনি সফল ব্যক্তিদের সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে শুরু করেন এবং জানতে পারেন যে বড় বড় সেলিব্রিটিরাও তাঁদের সাফল্যের ক্ষেত্রে অনেকবার ব্যর্থ হয়েছেন। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি অর্জন করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে চেন্নাইয়ের এমআরএম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন শ্লোক। এখান থেকেই ইউটিউবে পুরোদমে ভিডিও বানানো শুরু করেন তিনি।

বর্তমানে ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি ভাষায় খুব মজার ভঙ্গিতে ইউটিউবের ভিডিওতে শ্লোক মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদির পর্যালোচনা দর্শকদের কাছে তুলে ধরেন। পাশাপাশি, তিনি ২ টি ওয়েবসাইট এবং ৫ টি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনও চালু করেছেন। এছাড়াও, তিনি তাঁর সংস্থায় প্রায় ২০ জনকে চাকরি দিয়েছেন এবং ১০ জন ফ্রিল্যান্সারও যুক্ত।

প্রথম প্রথম ইউটিউবের ভিডিও তৈরির সময়ে তাঁর কাছে কোনো ল্যাপটপ, মোবাইল বা অন্যকিছু ছিল না। তিনি তাঁর বাবার ল্যাপটপ থেকে প্রথম ভিডিওটি তৈরি করেন। সেই সময়ে, ইউটিউবে তাঁর মাত্র ৫ জন সাবস্ক্রাইবার ছিল।

IMG 20220101 190202

তবে, চাকরির সুযোগ পেলেও সেটা করতে চাননি তিনি, কারণ তাঁর পুরো সময়টাকেই ইউটিউবে দিতে চেয়েছিলেন শ্লোক। সেই সময় তিনি ইউটিউব থেকে ২০০০ টাকা আয় করতেন। পাশাপাশি, চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে তাঁর পরিবারও সায় না দেওয়ায় সমস্যায় পড়েন তিনি। তবে, সেখান থেকেই নিজের রাস্তা খুঁজে পেয়েছিলেন শ্লোক।

এক্কেবারে প্রথমদিকে তিনি কেবলমাত্র ইংরেজিতে ভিডিও বানাতেন। তারপরে তিনি একদিন একজন অটোরিকশা চালককে তাঁর ভিডিও দেখিয়েছিলেন, যদিও সেই চালক ইংরেজি ভাষার ওই ভিডিও বুঝতে পারেন নি। তারপরেই শ্লোক উপলব্ধি করেন যে, এমন অনেকে আছেন যারা ইংরেজি জানেন না, তাই তাঁদের জন্যই নিজের মাতৃভাষা হিন্দিতে ভিডিও বানানো শুরু করেন তিনি। আর আজ দেশের প্রথম সারির ইউটিউবারদের তালিকায় খুব সহজেই জায়গা করে নিয়েছেন শ্লোক শ্রীবাস্তব ওরফে “টেক বার্নার”।

 

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর