বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের আদালতে ধমক খেল সিবিআই (CBI)। কেন শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) চক্রের কাছে মূলে পৌঁছতে পারছে না, বার বার সেই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে ভর্ৎসনা করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। আজ আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক নির্দেশ দেন, নিয়োগ দুর্নীতির বিশাল অঙ্কের টাকা যাঁদের কাছে পৌঁছেছে, তাঁদের ধরে আদালতে হাজির করতে হবে সিবিআইকে।
বুধবার ইডি-র কৌঁসুলি আদালতে দাবি করেন, কেস ডায়েরিতে উল্লিখিত নামগুলি প্রকাশ্য আদালতে বলা সম্ভব নয়। বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সেই সব নাম কেস ডায়েরিতে দেখে নেওয়ার জন্য বিচারককে আবেদন জানান তিনি। আজ বিচারপতি ক্রিকেটীয় ভাষায় সিবিআই-র তদন্তকারী আধিকারিকে বলেন, ‘আর কত দিন স্পিন বল করবেন? এ বার জোরে বল করুন। ওয়াসিম আক্রম কিন্তু জোরে বল করতেন।’ এই মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারের নাম আবাড ওয়াসিম খান।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষ, বেসরকারি কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি দাসকে এ দিন বিশেষ আদালতে তোলা হয়। সিবিআইয়ের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের নম্বর বাড়িয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষায় নম্বরের শতাংশ বাড়ানোর জন্য নির্ধারিত হারে টাকা নেওয়া হয় বলে জানায় কেন্দ্রীয় সংস্থা।
সিবিআই-র আইনজীবী বলেন, ‘নম্বর ৬৮% থেকে ৭২% করার জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হত। ৭০% থেকে বাড়িয়ে নম্বর ৭২% করার জন্য টাকার অঙ্কও বেঁধে দেওয়া ছিল। এই নিয়োগ দুর্নীতিতে এক শ্রেণির সরকারি কর্মচারীও জড়িত।’ ওই আইনজীবী আরও দাবি করেন, ‘গোটা দুর্নীতিতে দু’টি স্তম্ভ রয়েছে। একটি স্তম্ভ টাকা নিয়েছে। অন্য স্তম্ভের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর মাঝখানে রয়েছেন বাঁকা পথে চাকরি নেওয়া অযোগ্য প্রার্থীরা, যাঁরা টাকা দিয়েছেন। আমরা স্তম্ভগুলি জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছি।’
এরপরই বিচারপতি ওই আইনজীবীকে বলেন, ‘অভিযোগগুলো সময়ে সময়ে বদলে যাচ্ছে। যাঁদের কাছে টাকা পৌঁছেছে, তাঁদের হাজির করুন।’
এ দিন আদালত-চত্বরে তাপস মণ্ডল আবার বলেন, ‘কুন্তলের কাছে নতুন গল্প শুনুন।’ এক সপ্তাহ আগে ব্যাঙ্কশাল আদালত চত্বরে কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জোর করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ওই দলের শীর্ষ নেতাদের নাম বলার জন্য চাপ দিচ্ছে। এ দিন আদালত-চত্বরে কুন্তল জানান, প্রেসিডেন্সি জেল থেকে এই অভিযোগ জানিয়ে বিচারককে তিনি চিঠিও লেখেন।