বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিনের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ইতিমধ্যেই সেই মামলা ফেরত পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। ডিসেম্বরের মধ্যেই ইডির (ED) এই নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
পার্থর (Partha Chatterjee) বিরুদ্ধে চার্জগঠন নিয়ে বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে ED
মঙ্গলবার ইডির বিশেষ আদালতে ছিল চার্জ গঠনের মামলা। সেখানে পার্থ (Partha Chatterjee) ছাড়া বাকি অভিযুক্তদের আইনজীবীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর কথা বলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধেই চার্জগঠনের শুনানি হোক। যদিও পার্থর আইনজীবীর দাবি, ইডি আদালত সকলের মামলা সমানভাবে দেখছে। তাই সকলের চার্জগঠনের শুনানি একসঙ্গেই হবে। শুনানি শুরু হতেই বিচারকের তোপের মুখে পড়ে ইডি।
এই চার্জ গঠনের মামলায় মঙ্গলবার বিচার ভাবনে বিচারকের ধমকের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। ধমক দিয়ে তদন্তকারী সংস্থার উদ্দেশ্যে এদিন বিচারভবনের বিচারক সরাসরি বলেন, ‘আপনাদের জন্যই দেরি হচ্ছে’। প্রসঙ্গত এই মামলায় মোট ৫৪ জন অভিযুক্ত রয়েছেন। তবে ইডির দেওয়া নথি ছাড়াও, বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের আইনজীবী এখনও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাননি।
একথা তারা আদালতে জানাতেই বিচারকের ধমকের মুখে পড়তে হয়তদন্তকারী সংস্থাকে। এদিন বিচারক তদন্তকারী সংস্থাকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন শীতকালীন ছুটির মধ্যে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চার্জ গঠন করতে হবে। বড়দিন এবং রবিবার ছাড়া এই মামলার শুনানি চলবে। একই সাথে বুধবার আড়াইটার মধ্যে ইডিকে এই মামলার সমস্ত নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুনানির শুরুতেই ইডি’কে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারক বলেন, ‘আপনাদের জন্য চার্জ গঠনে দেরি হচ্ছে। একথা আগে কেন জানাননি? তাহলে সেই হিসাবে আমাকে নির্দিষ্ট নির্দেশ দিতে হত।’ এরপরেই বিচারক এদিন জানতে চান কেন তাঁরা এখনও নথি দিতে পারলেন না? এখনও আর কত দিন সময় লাগবে? তখন ইডির তরফে পালটা যুক্তিতে বলা হয়, ‘একটা মোবাইল ডাটা নিতে ১০-১২ ঘণ্টা সময় লাগে।’
আরও পড়ুন: কাকে আড়াল করছে? তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে CBI দপ্তরে ‘তালা’ ঝোলাল জুনিয়র ডাক্তাররা
তারপরেই বিচারক পাল্টা নির্দেশ দেন, ‘এখন ঘড়িতে দুটো বাজে। বারো ঘন্টা মানে রাত দুটোর মধ্যে কপি বানিয়ে ফেলুন। সারারাত জেগে কাজ করুন। ডিজিটালি দিলে হবে না। দরকার হলে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে দিয়ে আসবেন।’ তখন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা বলেন, ‘ওঁদের আসতে হবে না। আমরা যেতে পারি। কারণ ওরা এলে তো বলবে ইডি এসেছে। তাতে ইমেজ নষ্ট হবে।’
এরপরেই সময় বেঁধে দিয়ে আগামিকাল দুপুর আড়াইটের মধ্যে নথি জমা দেওয়ার কড়া নির্দেশ দেন বিচারক। সেইসাথে বলেন, ‘আমাকে তো রিপোর্ট দিতে হবে। ডিসান হাসপাতালেরমতো অবস্থা। তোমার ছুটি আমার নয়।’ যদিও ইডির আইনজীবী এদিন বলার চেষ্টা করেছিলেন, নথি জমা দিতে আগামীকাল বিকেল চারটে-পাঁচটা বেজে যাবে। কিন্তু সেই সুযোগ দেননি বিচারক।