বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সারা বিশ্বের মানচিত্রে তাদের আকার ছোট্ট হলেও বিশ্বব্যাপী করোনাচিত্রে অনন্য নজির স্থাপন করল ভুটান। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার হু-এর রিপোর্ট দেখে রীতিমতো মাথা ঘুরে গেছে সমস্ত দেশের। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন কাবু গোটা বিশ্ব। তখন গত ৩ জানুয়ারি থেকে আজ অবধি ভুটানে নতুন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১,১৯০ জন। আর মৃত্যু? মৃত্যু হয়েছে মাত্র একজনের। গত পাঁচমাসের এই দীর্ঘ ব্যাবধানে ভারতের মত দেশগুলিতে যখন চলছে মৃত্যুমিছিল। তখন কিভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করল ভুটানের মত ছোট একটি দেশ। হু জানাচ্ছে দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে ভুটান।
এই পাঁচ মাসের সময়পর্বের মধ্যে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৯৭ জনকে ভ্যাকসিনেট করতে সক্ষম হয়েছে তারা। ভুপ্রাকৃতিক দিক থেকে দুর্গম ভুটানের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানে পৌঁছানো মোটেই সহজ কথা ছিলনা। তার ওপর আরও অবাক করা তথ্যটি হল, গোটা দেশের সব প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ৯৩ শতাংশকেই মাত্র ১৬ দিনের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ সেরে ফেলছে তারা।হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই দেশ জুড়ে রয়েছে নানান দুর্গম প্রাকৃতিক এলাকা। যে সমস্ত জায়গায় ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া মোটেই সহজ কথা ছিল না। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় হেলিকপ্টারে করে বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে করোনার ভ্যাকসিন।
বেশিরভাগ ভুটান বাসিক এই দেওয়া হয়েছে অ্যাস্ট্রোজেনিকার ভ্যাকসিন। যার মধ্যে বেশিরভাগটাই দেওয়া হয়েছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে। ভুটানে ও বেশকিছু জায়গাতে ভ্যাকসিন নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংশয় ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা এবং সে দেশের সরকারের উদ্যোগে জনগণের মন থেকে এই ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে তৎপরতার সঙ্গে ক্যাম্পেনিং চালানো হয়। আর এরপর গোটা দেশেই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করে ভুটান।
গোটা বিশ্ব জুড়েই দেখা গিয়েছে, ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে শরীরে তেমন ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারছে না মহামারী করোনা। কিন্তু ভ্যাকসিন না নেওয়া থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগের প্রভাব হয়ে উঠছে মারাত্মক। আর সেই কারণেই ভুটানের এই ভ্যাকসিন বিপ্লব রীতিমতো নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের।