বাংলাহান্ট ডেস্ক : একটি গরুর মৃত্যুতে শিবাজী ওয়ার্ডের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকার মানুষ যখন জানতে পারে তাদের প্রিয় সুদামা গরু আর নেই, তখন তারা বিষণ্ণ চিত্তে শেষ বিদায়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। স্থানীয়রা তাদের পরিবারের সদস্যদের মতো সুদামা গরুর শেষকৃত্য সম্পন্ন করে।
গত ১৮ বছর ধরে বিনার শিবাজি ওয়ার্ডে কমলি রায়ের বাড়িতে পরিবারের সদস্যের মতো একটি গরু লালন-পালন করা হচ্ছিল। লোকে তাকে আদর করে ‘সুদামা’ বলে ডাকতো। আসল কথা হল, শিবাজী ওয়ার্ডের লোকজনের সাথে পরিবারের লোকজনও সুদামা গরুর প্রতি স্নেহশীল হয়ে পড়ে।
দীর্ঘ অসুস্থতার পর এই গরুর মৃত্যু হলে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সবাই সিদ্ধান্ত নেয় যে সুদামা যেভাবে পরিবারের একজন সদস্যের মতো থাকত, তার বিদায়ও সেভাবেই হবে। সমস্ত আচার-অনুষ্ঠানের সাথে সুসজ্জিত সুদামা গরুটিকে একটি হ্যান্ডকার্টের মাধ্যমে মুক্তিধামে আনা হয় যেখানে ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তাকে শেষ বিদায় জানান।
গরুর শেষ যাত্রার আগে এলাকার সকলে সুদামার আশীর্বাদ গ্রহণ করেন এবং তাকে শাড়িতে ঢেকে সবাই ঈশ্বরের কাছে শান্তি প্রার্থনা করেন। এরপর জেসিবি দিয়ে গর্ত খুঁড়ে গরুর দেহটি কবর দেওয়া হয়। এখানেও সবাই দুই মিনিট নীরবতা পালন করে সুদামার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সুদামা গাভী তিনটি বাচ্চার জন্ম দিয়েছে যারা দেখতে তার মতোই।
কমলী রায় বলেন, ‘সুদামা আমাদের পরিবারের কাছে মায়ের মতো ছিল। যখন থেকে সুদামা গাভী আমাদের পরিবারের সদস্য হয়েছে, তখন থেকে আমাদের পরিবারের অনেক সদস্যকে তাদের দুধ খাওয়ানো হয়েছে। পরিবারের অনেক সদস্য সুদামা গাভীর দুধে বড় হয়েছে, তাই আমরা প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলাম যে আমরা মায়ের দুধের ঋণ শোধ করব।’ তিনি আরও জানান, ‘আমাদের মা মারা গেছেন, গরু নয়। এজন্য তাকে পরিবারের সদস্যের মতো দাহ করা হয়েছে।’