বাংলাহান্ট ডেস্ক: দুদিন হাঁড়ি চড়েনি তৃণমূল (tmc) সাংসদ দেবের (dev) আপন জ্যাঠার পরিবারে। অভুক্ত রয়েছেন দেবের জ্যাঠার ছেলে, তাঁর মা, স্ত্রী সহ দুই ছোট ছোট ছেলে, মেয়ে। চালের আশায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা, গ্রাম প্রধানের কাছেও গিয়েছিলেন দেবের জ্যাঠতুতো ভাই বিক্রম অধিকারী। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে ফেরত পাঠানো হয় এই বলে যে, সাংসদের ভাইয়ের আবার ত্রাণ কি প্রয়োজন? শেষে এগিয়ে আসেন স্থানীয় সিপিআই(এম) (CPI(M)) সদস্যরা। চাল, ডাল দিয়ে তাঁরাই সাহায্য করেন তৃণমূল সাংসদের ভাইকে।
মেদিনীপুর শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে কেশপুর থানার মহিষদা গ্রামেই বাড়ি সাংসদ অভিনেতা দেবের। তাঁর বাবা গুরুপদ অধিকারী ও তিন দাদা শক্তিপদ, বিষ্ণুপদ ও তারাপদ একসঙ্গেই বড় হয়ে উঠেছেন। দেবের মেজ জ্যাঠা বিষ্ণুপদর ছেলেই হলেন বিক্রম। জানা যায়, প্রথম থেকেই অবস্থা বিশেষ ভাল ছিল না তাঁদের। বাবা মারা যাওয়ার পর বাসের হেল্পারের কাজ শুরু করেন বিক্রম।
কিন্তু এখন লকডাউন চলায় লাটে উঠেছে সেই কাজও। কিছুদিন স্ত্রীকে নিয়ে লোকের জমিতে ধানও কেটেছেন। বিক্রম জানান, সবার সঙ্গেই রেশন কার্ডের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কার্ড এখনও আসেনি। তবে এখন যাদের রেশন কার্ড নেই তারাও পাবেন রেশন। সেই আশায় স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কাছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে শুনতে হয়েছে, তিনি স্বয়ং সাংসদ দেবের ভাই। তাঁর রেশনের চাল খাওয়ার কি দরকার!
বাড়িতে ষাটোর্দ্ধ বিধবা মা, স্ত্রী ও ছোট দুই সন্তান রয়েছে বিক্রমের। বাচ্চাদের পেটে দুদিন ধরে পড়ছে শুধু মুড়ি। চালের খোঁজে বাধ্য হয়ে এরপর কেশপুর বাজারে আসেন বিক্রম। সেখানেই দেখা হয় স্থানীয় সিপিআই(এম) কর্মীদের সঙ্গে। বিক্রমের অবস্থা জানতে পেরে তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে চাল, ডাল ও কিছু নগদ টাকা দিয়ে আসেন বাড়িতে।
জানা যায়, দেবের পরিবার আগে সিপিআই(এম) ঘনিষ্ঠই ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবকে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেন। ঘাটালের অন্তর্ভুক্ত কেশপুর। তাই পরবর্তীকালে এখানকার রাজনৈতিক রঙও পরিবর্তিত হয়। জানা গিয়েছে, রেশন কার্ডই শুধু নয়, বিধবা বা বার্ধক্য ভাতাও পান না দেবের জেঠিমা। এই প্রসঙ্গে বিক্রম বলেন, ‘দাদা নিজের যোগ্যতায় সাংসদ হয়েছে। কিন্তু আমরা গরিব সেটা সবাই জানে। তারপরেও এই নির্মম রসিকতার কি মানে জানা নেই।’