বাংলাহান্ট ডেস্ক : ঘোরতর সঙ্কটের মুখে সিপিএম। জেলা সম্মেলনের পরেও উত্তর ২৪ পরগনায় তৈরি হল না কমিটি। যা কিনা বামেদের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলেই দাবি পর্যবেক্ষক মহলের।
সোমবার থেকে ৩ দিন ধরে প্রায় সাতশো লোক নিয়ে নৈহাটিতে হয় সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলন। সেখানে থেকে, খেয়ে, বিপ্লব কপচেও কাজের কাজ হল না কিছুই। বুধবার রাতে হঠাৎ করেই মুলতুবি রাখা হয় জেলা সম্মেলন। গঠন করা হল না নতুন কমিটিও। কেন মূলতুবি করা হল সম্মেলন সেই উত্তরও দেওয়া হয়নি দলের তরফে।
বামেদের এহেন সংকট কার্যতই নজিরবিহীন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য থেকে প্রায় মুছে গিয়েছে সিপিএম৷ কিন্তু তারই মাত্র দশ মাসের মধ্যেই পুরভোটে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে দেখা গেছে লাল শিবিরকে। পুরসভা স্তরে শাসকদলের প্রধান বিরোধী এখন বামেরাই। কিন্তু দলের সম্মেলনের পরও কমটি গঠন মূলতুবিত ঘটনা কখনওই আগে হয়নি তা বলাই বাহুল্য।
সিপিএমের সংবিধান অনুযায়ী, সম্মেলন থেকেই গঠন করতে হয় কমিটি। তারপর সম্মেলন মঞ্চে সভা করে নতুন কমিটি। এরপর সেই সভাতেই বেছে নেওয়া হয় কমিটির পদাধিকারীদের। এক নেতার দাবি, ‘অনেক সময় এমনও হয়েছে যে সম্মেলনে কমিটি নির্বাচন হয়ে গেলেও পদাধিকারী পরে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু এবারে কমিটিই গঠন করেনি দল।’
জানা যাচ্ছে, কমিটির জন্য ৭১ জনের নামের একটি প্যানেল তৈরি করেছিলেন বিদায়ী সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী। এরপরই জনা পঁচিশ নেতা ভোটে দাঁড়িয়ে পড়েন। কিন্তু শেষ অবধি সেই ভোটও হয়নি। দলের একাংশের মতে, ওই ভোট হলে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যেত দলের একাধিক তাবড় নেতার। সেই কারণেই ভয়ে ভয়ে ভোট বাতিল করে দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের তরফে এই ভোট এপ্রিল মাসে করা হবে এমনটা জানানো হলেও অনেকের মধ্যেই বুথ দখলের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নৈহাটির এই ঘটনায় কার্যতই সামনে এসে পড়েছে সিপিএমের অন্দরের কঙ্কালসার চেহারা। দলের নেতাদের ব্যাপারে কী ধারণা পোষণ করেন নীচু স্তরের কর্মীরা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তাও। পুরো ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে বেশ ভালোই বিড়ম্বনায় পড়েছেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিমের মতন নেতারা তা বলাই বাহুল্য।