বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাজ্যের লাল শিবিরে এবার লাগতে চলেছে রামধনু রঙ। প্রান্তিক যৌণতার মানুষদের নিয়ে গণ সংগঠন গড়ার পথে সিপিএম। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে কার্যতই মুছে গিয়েছিল সিপিএমের নাম। একটিও আসন পায়নি লাল শিবির। কিন্তু হাল ছাড়তে কিছুতেই রাজি নয় তারা। দলের অন্দরে একাধিক ছোটো বড় সাংগঠনিক ক্রুটি থাকলেও সেসব সামলেই নিজেদের সময়োপযোগী করে তোলার দিকেই মন দিয়েছে তারা। সে কোভিড পরিস্থিতিতে রেড ভলেন্টিয়ার হোক, বা কমিউনিটি কিচেন। এবার সেই দিকেই নতুন পদক্ষেপ এই সংগঠন। প্রান্তিক যৌনতার ‘মানুষদের নিয়ে গঠিত এই গণ সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেমোক্রেটিক অ্যাসোসিয়েশন অফ এলজিবিটিকিউআইএ+ ‘।
দিন কয়েক আগেই কলকাতার মহিলা গণ সংগঠনের ইলিয়ট রোডের অফিসে এই নতুন সংগঠনের একটি সম্মেলন হয়। সেখানেই প্রাথমিক ভাবে গঠিত হয় ১৯ জনের একটি কমিটি। আপাতত গড়ে তোলা ওই কমিটিটির নামকরণ হয়েছে এনজিবিটিকিউ+ গণতান্ত্রিক সমিতি। এদিনেই এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের অন্যান্য নেতা নেত্রীরাও। ছিলেন সিপিএম নেতা ফুয়াদ হালিম, ছাত্রনেতা দেবাঞ্জন দে, দলনেত্রী বর্ণনা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। প্রাথমিকভাবে ওই নতুন সংগঠনের দুজন আহ্বায়ক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন অপ্রতিম রায় এবং কণীনিকা ঘোষ।
জানা যাচ্ছে, বামেদের লড়াই আন্দোলনে পাশে থাকবে এই নতুন সংগঠনও। তাদের নিজস্ব ঢঙ এবং স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেই চলবে হাতে হাত রেখে লড়াই। আপাতত নতুন এই সংগঠন তৈরি হলেও বিস্তর কাজ বাকি। পতাকা, স্লোগান, সংবিধান, কর্মসূচি, দাবিদাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে কাজ চালাবে ১৯ জনের ওই কমিটি। তারপর ধীরে ধীরে বিস্তার করা হবে সংগঠন।
বলাই বাহুল্য, দেশে প্রান্তিক যৌনতার মানুষদের তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয় দিয়েছে আদালত। কিন্তু সেখানেই শুরু সেখানেই শেষ। সেই অর্থে দেখতে গেলে তারপর আর মেলে না প্রায় কোনও সুযোগ সুবিধাই। এমনকি সাধারণ মানুষের অধিকার টুকু থেকেও বঞ্চিত করা হয় তাঁদের। প্রান্তিক যৌনতার মানুষদের নিয়ে ভারতে এর আগে কোনও রাজনৈতিক দলই কোনও রকম সংগঠন তৈরির কথা ভাবেনি। এক্ষেত্রে সিপিএমই প্রথম, যারা দেশে এলজিবিটিকিউ+ মানুষদের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন তৈরির পথে হাঁটল। যা অভিনব এবং বৈপ্লবিক বলেও দাবি করছেন অনেকেই। সিপিএমের এক নেতার দাবি, আজীবনই নিপীড়িতের পাশে থেকেছে সিপিএম। তাই এবারও এলজিবিটিকিউ মানুষদের নিয়েই সংগঠন বানাচ্ছে লাল শিবির।