কদিন আগেই করেছিলেন সভা, অভিষেক ফিরতেই তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল নিল বামেরা

বাংলা হান্ট ডেস্ক : ২০১১ সালে রাজ্যে ঘটেছে ক্ষমতা বদল। এর পর থেকেই জেলায় জেলায় একাধিক বার সিপিএম (CPM) অভিযোগ করেছে তৃণমূল (TMC)তাদের পার্টি অফিস কেড়ে নিচ্ছে। কিন্তু এবার দেখা গেল উলট পুরান। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেই সিপিএমের বিরুদ্ধেই পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipore) কেশপুরে পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ তুলল শাসকদল। ঘটনা ঘিরে শোরগোল ছড়িয়েছে ঘাটালের তৃণমূলের অভিনেতা সাংসদ দীপক অধিকারীর মহিষদা গ্রামে।

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে অবাক কাণ্ড। তৃণমূলের হাতে দখল হয়ে যাওয়া পার্টি অফিস পালটা দখল করল সিপিএম। তাও আবার যেমন তেমন জায়গায় নয়। রাজনৈতিক সংঘর্ষের জন্য কুখ্যাত কেশপুরের মহিষদায়। যে গ্রামের বাসিন্দা অভিনেতা সাংসদ দেবের পরিবার। জানা যাচ্ছে পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে স্থানীয় সিপিএম কর্মী সমর্থকরা। এরপর লজ্জায় মুখে কুলুপ দিয়ে রেখেছে জোড়াফুল শিবির। অদ্ভুতভাবে, এই কেশপুরেই কয়েক দিন আগে জনসভা করে এসেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকায় প্রবল উত্তেজনা থাকায় পুলিস বাহিনী মোতায়েন করা হয় বলে জানা যায়। অবশ্য তৃণমূলের পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে সিপিএম।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যায় ওই পার্টি অফিস থেকে তৃণমূলকর্মীদের বার করে তালা লাগিয়ে দেয় সিপিএম কর্মীরা। ঘটনার পরই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন হয় পুলিস। সিপিএমের কেশপুর-১ এরিয়া কমিটির সদস্য অমিত দোলইয়ের দাবি, ‘তৃণমূল সরকারে আসার পরেও নিজেরা এলাকায় কোনও পার্টি অফিস তৈরি করতে পারেনি। উল্টে তারা সিপিএমের পার্টি অফিস দখল করে নিয়েছে।’

tmc

এরই মধ্যে জানা যায়, ২০১৬ এবং ২০২১ সালের নির্বাচনের সময় সিপিএমকে বেশ কিছু পার্টি অফিস ফেরানো হলেও নির্বাচনের পর আবার তা দখল করে নেয় তৃণমূল কর্মীরা। দলের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ দাবি করেন এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, ‘পার্টি অফিস দখল নেওয়ার ব্যাপারে আমি তেমন কিছু জানি না। বিষয়টি কেশপুরের নেতৃত্ব দেখছেন।’ পরে যদিও পুলিসের উপস্থিতিতে পার্টি অফিসটি খোলা হয় বলে জানা যায়।

এই প্রসঙ্গে, তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘জোর করে একটা মাতাল সিপিএমের মদতে ওই পার্টি অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কর্মীরা কিছু ব্যবস্থা নিতেই পারত। কিন্তু তাঁরা পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওঁদের পার্টি অফিসে বসার মতো লোকই নেই। তার পরেও ওঁরা পার্টি অফিস দখল করছে!’

এদিকে, স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি ওই পার্টি অফিস তাদের তৈরি করা। কয়েক বছর আগে সেটি দখল করে নেয় তৃণমূল। তার পর বারবার পার্টি অফিস হস্তান্তর করতে বললেও পাত্তা দেয়নি শাসক দল। অবশেষে শনিবার পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন সিপিএম নেতারা। স্থানীয় এক সিপিএম নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘এই গ্রামের ছেলে সাংসদ। কিন্তু গ্রামে তাঁর দেখাই পাওয়া যায় না। কোনও উন্নয়ন হয়নি গ্রামে। পার্টি অফিস ওদের জিম্মায় রেখে তাহলে লাভটা কী হল? তাই আমাদের পার্টি অফিস আমরা ফিরিয়ে নিয়েছি।’


Sudipto

সম্পর্কিত খবর