বাংলাহান্ট ডেস্ক : কাল থেকেই শুরু হয়েছে বঙ্গ সিপিএম-র রাজ্য সম্মেলন। আর তার প্রথম দিনেই সমালোচনায় জেরবার বাম নেতারা। বিধানসভা ভোটের আগের অবাস্তব এবং একতরফা সিদ্ধান্ত, ভোটে নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা, সম্মেলন মঞ্চে শীর্ষ নেতৃত্বের দিবানিদ্রা, সব কিছু নিয়েই প্রতিনিধি দলের তোপের মুখে লাল শিবির।
পদ ছাড়ছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। বিদায়ী এই রাজ্য সম্পাদকের দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে সঙ্কটময় অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দল। এই বিষয়ে একটি রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক খসড়া দলিলও পেশ করেন তিনি। জনগনের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের পথ যে ভুল ছিল একথাও স্বীকার করেন তিনি। এরপরই রাজ্যের কমরেড কুলের নেতাদের তুলোধোনা করতে দেখা যায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে।
মঙ্গলবার সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রায় ৭০০ প্রতিনিধি। সীতারাম ইয়েচুরি, বিমান বসু হয় ৭ পলিটব্যুরো সদস্যও হাজির সেখানে। তবে প্রথম দিন থেকেই জেলাস্তরের নেতাদের মুখে বেরিয়ে এসেছে ক্ষোভের আগুন। কলকাতারা নেতারা যে একতরফা সিদ্ধান্তই নেন এই অভিযোগ এনে সরব হয়েছেন রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলার নেতাই। এমনকি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান নিয়েও ওঠে প্রশ্ন।
ভোটের আগে দলের সিদ্ধান্তকে ভুল দেগে সরব হন জেলার নেতারা। তাঁদের দাবি, ভোটের আগে নিচুস্তর তো দূরস্ত জেলাস্তরের নেতাদের সঙ্গেও বিন্দুমাত্র আলোচনা করেনি শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রয়োজন মনে করা হয়নি তাঁদের মতামত এবং সিদ্ধান্ত জানার। এহেন মনোভাব নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব চললে বাকি কোনও সংগঠন বা নেতাদের দরকার নেই স্পষ্টতই এমনটাই অভিযোগ তাঁদের।
এদিন সম্মেলনে সুর চড়ান তন্ময় ভট্টাচার্য, অপুর্ব সরকার, সমর মুখোপাধ্যায়, দেবজ্যোতি সিনহা, মোনালিসা সিনহা, গীতা হাঁসদা প্রমুখ জেলাস্তরের নেতারা একের পর এক অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করতে থাকেন রাজ্য নেতৃত্বের দিকে। ছাত্র সংগঠন এবং যুব নেতারা আন্দোলনে পথে নামে নিয়মিত। কিন্তু কখনওই পথে নামতে দেখা যায়না শীর্ষ নেতৃত্বকে। তাঁরা শুধুই কার্যালয়ে বসে কলকাঠি নাড়েন এবং ‘দিবানিদ্রা’ যান। নেতাদের এহেন মানসিকতা চলতে থাকলে দলের পতন অনিবার্য বলেও দাবি করেন একাধিক প্রতিনিধি। এমনকি নেতাদের উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় দল এই অভিযোগও তুলে দাবি করা হয় যে বুদ্ধবাবুকে পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য করেছিল দলই। যা নিয়ে শিরু হয় তীব্র বিতর্ক। কার্যতই সম্মেলনের প্রথম দিনেই এহেন অবস্থা কাটিয়ে কি কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারবে দল? নাকি গোধূলীর সঙ্গে সঙ্গেই মুছে যাবে বাংলার লাল? এই নিয়েই এখন জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে।