বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তারিখ পে তারিখ! সবমিলিয়ে মোট ১৩ বার সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়েছে ডিএ (Dearness Allowance) মামলার শুনানি। এরপর একবারে ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি ডিএ মামলার (DA Case) শুনানি রয়েছে শীর্ষ আদালতে। এবারে কি শুনানি হবে? নাকি ফের পাকাবে জট? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সরকারি কর্মীদের (Government Employees) মনে। এরই মধ্যে বড় কথা বলে দিলেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়।
এই বিষয়ে সম্প্রতি সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মলয়বাবু বলেন, যদি ৭ তারিখও ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়, তাহলে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে সরাসরি চিঠি দিতে চলেছেন তারা। তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত ১৩ বার পিছিয়েছে ডিএ মামলা। ৭ জানুয়ারি এই মামলাটি হয় কি না দেখি। আমরা এখন আর মামলাটি এগিয়ে নিয়ে আসার কথা বলিনি কারণ ৭ জানুয়ারি চলেই এসেছে।’
এরপরই মলয়বাবু বলেন, ‘যদি এবারও মামলা পিছিয়ে যায় তাহলে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে আমরা চিঠি দেব। এর আগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কেও ৩-৪টি চিঠি দেওয়া হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘ এর আগে মামলার শুনানির দিনগুলিতে বিমানে করে দিল্লি গিয়েছি। তবে এখন অর্থের অভাবের কারণে ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছে। আসলে সরকার চাইছে মামলাটিকে দীর্ঘায়িত করতে। যাতে মামলাকারী সরকারি কর্মীদের টাকা ফুরিয়ে যায় এবং সকলে মামলা থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হন।’
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে এখন পশ্চিমবঙ্গের যে ডিএ মামলা চলছে, সেটা পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় বকেয়া থাকা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত। বর্তমানে ষষ্ঠ পে কমিশনের আওতায় ১৪ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। ২০২২ সালের ২০ মে ডিএ মামলা হাইকোর্টে উঠলে আদালতের নির্দেশ ছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তবে সেবার জয় পেয়েও মেলেনি বকেয়া।
হাইকোর্টের ডিএ (Dearness Allowance) রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। যদিও তা খারিজ হয়ে যায়। এরই মাঝে তিনটি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার দায়ের করে। সেই মামলার মধ্যেই পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।
সেই ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা চলছে। বর্তমানে ২০২৪ সাল। হাইকোর্টে ডিএ মামলাকারীরা জয় পেয়েছিল।
গত ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। এরপরই রাজ্য সরকার স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করে। সেই প্রেক্ষিতেই মামলা শুরু হয়। তারপর থেকে আরও একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা আদালতে উঠলেও বারে বারে শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। এবারে একেবারে নতুন বছরে রয়েছে শুনানির দিন।
আরও পড়ুন: উচ্চ-প্রাথমিকের তৃতীয় দফার কাউন্সেলিং নিয়ে বড় আপডেট! সামনে এল দিনক্ষণ
উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতেই ডিএ বৃদ্ধি পেয়েছিল রাজ্য সরকারি কর্মীদের। চলতি বছর দু’বার ডিএ বৃদ্ধি করেছে রাজ্য। আগে ৬ শতাংশ করে ডিএ পাচ্ছিলেন সরকারি কর্মীরা। ডিসেম্বরের ঘোষণা অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়েছিল রাজ্যের কর্মীদের। এপ্রিলে ফের আরও ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়েছিল। বর্তমানে ষষ্ঠ পে কমিশনের আওতায় ১৪% হারে ডিএ পাচ্ছেন বাংলার সরকারি কর্মীরা।