বাংলা হান্ট ডেস্ক: কার ভাগ্যে কি লেখা আছে তা কেউই বলতে পারেনা। তবে, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন চাইলেই যে কেউ করতে পারেন। যদিও এই পথও হয় অত্যন্ত কণ্টকাকীর্ণ। তবে নিজের উপর বিশ্বাস, জেদ এবং একাগ্রতার ওপর ভর করে কিছু কিছু মানুষ সত্যিই পাল্টে ফেলেন তাঁদের ভাগ্যচক্র। পাশাপাশি তাঁরা অনুপ্রাণিত করেন বাকিদেরকেও। ঠিক যেমন আজ সকলের কাছেই রাজস্থানের বারমেরের অসুরাম গধবীর হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণার উৎস।
কারণ ইতিমধ্যেই তিনি জীবনের সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন তাঁর লক্ষ্যে। বর্তমান প্রতিবেদনে এই উত্তরনের কাহিনিই উপস্থাপিত করব আমরা। জানা গিয়েছে, প্রথম থেকেই অসুরামের পরিবার আর্থিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল ছিল। যদিও, তিনি নিজের পড়াশোনায় কোনোরকম খামতি রাখেননি। বরং, তীব্র লড়াই করে কঠোর বাস্তবের সম্মুখীন হয়ে তিনি নিজের লক্ষ্যে স্থির ছিলেন। এমতাবস্থায়, অসুরাম সহকারী অধ্যাপকের পরীক্ষায় তফসিলি জাতির বিভাগে রাজ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন।
২০ টাকার দৈনিক মজুরিতে কাজ করতেন:
রাজস্থানের বারমেরের একটি ছোট গ্রাম চৌহাটনের বাসিন্দা অসুরাম বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পরিচিতি পেলেও জীবনযুদ্ধে তাঁকে দারুণ সংগ্রাম করতে হয়েছে। এমনকি, অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণকারী অসুরামকে শৈশবে সংসার চালাতে মাত্র ২০ টাকায় দিনমজুরের কাজ করতে হত। শুধু তাই নয়, খরচ সামলাতে অসুরামের বাবা-মা এখনও এই কাজ করেন।
দিন-রাত এক করে পরিশ্রম:
কথায়, আছে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প হয়না। আর এই আপ্তবাক্যকেই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন অসুরাম। সারা দিন পরিশ্রমের পর তিনি সন্ধ্যে আটটা থেকে রাত দু’টো পর্যন্ত নিয়মিত পড়াশোনা করতেন। এর পাশাপাশি, তিনি শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় সফল হয়ে শিক্ষক হন। তারপরেই তিনি পিজি ও নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এদিকে, অসুরামের এই বিরাট কৃতিত্বে স্বভাবতই খুশি তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
ছোট ভাইয়ের আত্মত্যাগ তাঁকে সফল করেছে:
তবে, তাঁর কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি অসুরামকে সফল করার পেছনে তাঁর ছোট ভাইয়ের আত্মত্যাগও জড়িত। জানা গিয়েছে, আর্থিক অনটনের কারণে দাদার লেখাপড়ায় যাতে কোনো ধরনের বাধা না আসে সেজন্য অসুরামের ছোট ভাই পঞ্চম শ্রেণিতেই পড়াশোনা ছেড়ে দেন। এদিকে, অসুরামও তাঁর এই আত্মত্যাগ ভোলেননি। বরং, এই বিরাট সাফল্যের পর অশ্রুসিক্ত চোখে তিনি জড়িয়ে ধরেন ভাইকে। এদিকে, অসুরামের এই বিরাট সফলতার খবর সামনে আসতেই তাঁকে কুর্ণিশ জানাচ্ছেন সকলেই।