বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদ থেকে একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে এক মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করায় প্রাণ দিতে হল এক দলিত যুবককে। মেয়েটির পরিবারের লোকজন দলিত যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে । এই ঘটনাটি প্রকাশ্য রাস্তায় ঘটেছিল, মহিলাটি সেখানে উপস্থিত লোকদের সামনে কাঁদতে থাকেন, অনুনয়-বিনয় করতে থাকেন কিন্তু কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। অবশেষে যুবকটি প্রাণ হারায় এবং অভিযুক্তরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে সরুরনগরে। পরিবারের সদস্যদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এক দলিত যুবককে বিয়ে করেছিলেন ওই মহিলা। এতে চটে যায় মুসলিম মহিলার পরিবারের সদস্যরা। বুধবার রাতে মুসলিম মহিলা যখন তার স্বামীর সাথে স্কুটারে যাচ্ছিলেন, তখন ওই মহিলার ভাই ও কয়েকজন আত্মীয় তার স্বামীর উপর হামলা করে।
ঘটনার পর মহিলাটি যা বললেন, তা হৃদয় বিদারক। মহিলাটি জানান, তারা সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকার সময় তার ভাইসহ পাঁচজন সেখানে আসেন। তারা তার স্বামীকে লোহার রড দিয়ে মারধর শুরু করে। সে চিৎকার করে এবং হাতজোড় করে ঐ হামলাকারীদের চলে যাবার জন্য অনুরোধ করতে থাকে, কিন্তু হামলাকারীরা তার আবেদনে সারা দেয়না। এমনকি প্রকাশ্য রাস্তায় এই নৃশংস ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও সেখানে উপস্থিত কেউই এই দম্পতির সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে না।
ঘটনার পর থেকে ওই মহিলা বারবার বলছেন, ‘আমার চোখের সামনেই আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে।আমি কিছুই করতে পারিনি।’ মহিলাটি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সিগন্যালে অনেক লোক ছিল, সবাই দেখেছে, আমি বলেছিলাম স্বামীকে ছেড়ে দেব….. তোমরা যাকে বলবে, তাঁকেই বিয়ে করব। কিন্তু ওঁরা কেউ আমার কোথা শোনেনি। আমি ওকে বিয়ে করেছি বলেই ওকে মরতে হল।
A Hindu man was brutally murdered for marrying a Muslim women. The incident reported in Saroornagar limits. Nagaraju & Ashrin Sulthana were in relationship since last few years & got married in Jan 22. Nagaraju was murdered by his brother-in-laws today. pic.twitter.com/EZ6wZwWqxY
— Sowmith Yakkati (@sowmith7) May 4, 2022
মহিলা বলেন, আমি আশেপাশের লোকেদের কাছে সাহায্য চাই, কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি । পুলিশও ছিল না সেখানে। আমি চিৎকার করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি। আমি এর বিচার চাই। আমি হত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
উল্লেখ্য, ২৫ বছর বয়সী নাগরাজ হায়দারাবাদের বিল্লাপুরমে থাকতেন। উনি ২৩ বছর বয়সী সৈয়দ সুলতানাকে দুই মাস আগেই বিয়ে করেছিলেন। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ১১ বছর ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। তবে, এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি সুলতানার পরিবার। আর এর চরম মূল্য চোকাতে হল নাগরাজকে। এই ঘটনার অনেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় নাগরাজকে রাস্তায় পড়ে ছটফট করতে দেখা যায়।