৭৪ বছর বয়সেও ভিন রাজ্যে কর্মরত বাবা, বাড়ি আসেন চার মাস পর! অভাবের কথা জানালেন দেবাংশু

বাংলা হান্ট ডেস্ক : এই মুহুর্তে তৃণমূলে ভালো বক্তার তালিকায় প্রথমের দিকেই নাম থাকবে দেবাংশু ভট্টাচার্যর। (Debangshu Bhattacharya)। যুব তৃণমূল নেতা হিসাবে তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। তীক্ষ্ণ বক্তৃতায় বিপক্ষকে ছারখার করে ফেলেন তিনি। হাস্যরসকে হাতিয়ার করে সিপিএম (CPM) বিজেপি (BJP) -কে বিদ্রুপ করতে তিনি মারাত্মক পারদর্শী।

তবে এবার দেবাংশু ব্যতিক্রমী পোস্ট করলেন। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ঝড় উঠেছে রাজ্য রাজনীতিতে। এই অবস্থায় দেবাংশু নিজের জীবনের কঠিন লড়াইয়ের কথা বললেন। লিখলেন তাঁর বাবার কথা। দেবাংশু লিখলেন, ‘বাবা মোটামুটি রোজগার করতেন, আজ তা অনেকটাই তলানিতে এসে ঠেকেছে। মা গৃহবধূ। বাড়ির এক কাকা ৬০ এর দোরগোড়ায় এসেও ১৩ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে গিয়ে টুপি, মোজা বিক্রি করেন। অপর কাকা ৭০ পেরিয়েছেন, মাস ৬ আগে অবধিও বাজারে প্লাস্টিক বিছিয়ে বারমুডা, মাস্ক বিক্রি করতেন। শরীরের অবস্থার জন্য আজ আর পারেন না।’

সেই পোস্টে আরও লেখা রয়েছে, ‘৭০ পেরোনো কাকার ৫৫ বছর বয়সী স্ত্রী, আমার কাকিমা ঘরে ভাই বোনেদের রেখে আয়ার কাজ করতে যান। রাত্রি, দিন দুই শিফটে। ৬০ পেরোনো কাকার ৫০ ছুঁই ছুঁই কাকিমা বিকেলে রুটি বিক্রি করেন। দুজনেরই ছেলে-মেয়েরা বছর খানেক হল ছোট খাটো কাজ করছে.  কিন্তু স্বচ্ছল ভাবে কারোরই চলে না। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এক কাঠার সামান্য বেশি জায়গায় একতলা, একদিক প্রায় ভেঙে পড়া একটা বাড়িতে আমরা ১৭ জন সদস্য একসাথে থাকতাম।’

Untitled design 14 3

দেবাংশু আরও লেখেন, ‘ঠাকুমা মারা যাওয়ার পর বাবারা চার ভাই মিলে ঠিক করেন বাড়িটা এবার থাকার মত করে করতে হবে। আমার এই দুই কাকা বড় অংকের লোন নিয়ে বাড়ি তৈরীর কাজে নামেন। ২০১৯ এ ওই এক কাঠা জায়গাতেই কোনরকমে একটা দোতলা বাড়ি তৈরি করা হয়। কিন্তু সেই লোন আজও সেভাবে শোধ হয়নি..বাবা গত ৪৮ বছর ধরে বাইরে কাজ করেন। আজ বাবার বয়স ৭৪ প্রায়। ২২০০ কিলোমিটার ট্রেনে করে যাতায়াত করেন মাস চারেক ছাড়া ছাড়া। যে কোম্পানিতে কাজ করেন তাদের অবস্থা এখন আগের মত নেই।’
এরপরই দেবাংশু বলেন নিজের দিদির কথা। তিনি বলেন, ‘দিদি একটি বেসরকারি ফার্মে কাজ করে। আমার রোজগার বলতে ফেসবুকের আয়। তার সঙ্গে কিছু ফ্রি ল্যানসিং লেখালিখি। কিছু পোর্টালের সাথে কাজ। আমি কখনো সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসিনি, প্রাইভেটেও যাইনি। ব্যবসার ইচ্ছে ছোটবেলা থেকেই ছিল..যতদিন না অন্তত একটা ব্যবসা দাঁড় করাচ্ছি, বাবাকে আজও বলতে পারিনা, তুমি চলে এসো.. এখানে এসে থাকো। কারণ বাবা চলে এলে সংসার বসে যাবে।’

Sudipto

সম্পর্কিত খবর