বাংলাহান্ট ডেস্ক: লকডাউনের (lockdown) কিছুদিন আগেই হাত ভেঙেছে বাবার। তাই কলেজ পড়ুয়া মেয়েই হাল ধরেছে সংসারের। কাকভোরে উঠে কাগজ ফেরি করে আবার বাড়ি ফিরে পড়াশোনা। সবদিক দশভূজার মতোই সামলাচ্ছে বছর উনিশের সুনেত্রা। সঙ্গে অবশ্য রয়েছে মা নীতাদেবীও। মা মেয়ে মিলেই প্রতিদিন খবরের কাগজ বিক্রি করে সংসারের জোয়াল তুলে রেখেছেন।
রিষড়ার মোড়পুকুর বকুলতলার বাসিন্দা শৈবাল দত্ত। পেশায় খবরের কাগজের হকার তিনি। ছোট সংসারে রয়েছেন স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে। লকডাউন ঘোষনা হওয়ার কয়েকদিন আগেই হঠাৎ বাথরুমে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে যায় তাঁর। তখন থেকেই বাবার কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় সুনেত্রা।
প্রতিদিন ভোর ৫টায় শুরু হয় সুনেত্রা ও নীতাদেবীর সংগ্রাম। বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে রিষড়া স্টেশন বা আরও খানিকটা গিয়ে জিটি রোড থেকে খবরের কাগজ নিয়ে তারপর মোড়পুকুর, পঞ্চাননতলায় বাড়ি বাড়ি কাগজ বিলি করা। দুজনে প্রতিদিন প্রায় ১২৫টি কাগজ বিলি করেন।
কাগজ দিয়ে সুনেত্রার বাড়ি ফিরতে ফিরতে সকাল ৮টা। বাড়ি ফিরে মাস্ক, গ্লাভস খুলেই সে বসে যায় অনলাইন ক্লাস করতে। হাওড়ার একটি পলিটেকনিক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সে। কলেজ ছুটি থাকলেও অনলাইন ক্লাস চলছে। এর আগেও একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে বাবার অসুস্থতার সময় এই কাজ সামলেছে সুনেত্রা।
সুনেত্রার কথায়, “অনেকে ভাবেন আমি কাগজ বিলি করি মানে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছি। কেন পড়াশোনা সামলে কি কাজ করা যায় না?” মা নীতাদেবী বলেন, “স্বামীর হাত ভাঙার পরে সিদ্ধান্ত নিলাম কাজ আমি সামলাবো। মেয়েও সঙ্গ দিল। বাড়ি ফিরে আমার ঘরের কাজেও ও সাহায্য করে।” কৃতজ্ঞ শৈবাল বাবুর কথায়, মেয়েরা সত্যিই সব পারে।