অপহরণের ১০ দিন পর উদ্ধার তৃণমূল কর্মীর মুণ্ডহীন দেহ! গ্রেফতার পাঁচ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : অপহরণের ১০ দিন পর ডোবার পাশে মাটিতে পোঁতা অবস্থায় উদ্ধার হল তৃণমূল কর্মীর মুণ্ডহীন দেহ। এহেন চাঞ্চল্যকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে মালদহের হরিশচন্দ্রপুর থানার কাতলামারি এলাকায়। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরাও তৃণমূল কর্মী বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। যদিও এই ঘটনার পিছনে দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি।

জানা যাচ্ছে মৃত ওই তৃণমূল কর্মীর নাম আব্দুল বারেক। পরিবার সূত্রে খবর, গত ১৪ মে রাতে মুখে কাপড় বেঁধে দলবল নিয়ে আব্দুল বারেকের বাড়িতে চড়াও হয় ধৃত বশির। তখনই তুলে নিয়ে যাওয়া হয় আব্দুল বারেককে। স্ত্রী সায়েমা বিবি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকেও। ঘটনার প্রেক্ষিতে বসির সহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই তৃণমূল কর্মীর পরিবার। এরপর নেপাল সীমান্ত থেকে বসির এবং আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করার পরই সামনে আসে সত্য। জানা যায় আব্দুল বারেককে কুপিয়ে খুন করে তারা। তারপর ধড় থেকে আলাদা করে ফেলা হয় মুণ্ড। ধৃতদের কথামত বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে মাখনার জলাশয়ের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় আব্দুল বারেকের গলাকাটা দেহ। যদিও কাটা মাথা পাওয়া যায়নি এখনও।

স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বসির এবং উনসাহক এই দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চরমে। আব্দুল বারেককে অপহরণ করে পুরো এলাকার দখল নিতে চেয়েছিল বসির এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। নেপালে পালিয়ে গা ঢাকা দিতে চাইলেও শেষ মুহুর্তে সীমান্ত এলাকা থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নিহত আব্দুল বারেকর ভাই সাহেবজানের দাবি, ‘বসির চায় যে, ও একাই এলাকায় রাজত্ব করবে। আমরা বাধা দেওয়ায় একাধিকবার আমাদের উপরে গুলি চালানো হয়েছে। আমাকেও একবার গুলি করা হয়েছিল। কোনওরকমে প্রাণে বেঁচেছি।’ অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিও তুলেছেন সায়েমা বিবি। অন্যদিকে আবার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি হজরত আলি জানিয়েছেন, ‘ওরা দু’পক্ষই এখন তৃণমূল করে। আগে একপক্ষ কংগ্রেস ছিল, একপক্ষ সিপিএমের ছিল। ওদের স্বভাব বদলায়নি। তবে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতি নেই। এটা ওদের দুপক্ষের পুরনো বিবাদ। আইন আইনের পথেই চলবে।’ মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদবেরও দাবি যে পুরোনো বিবাদের জেরেই খুন করা হয়েছে। ঘটনায় রাজনীতি নেই বলেই জানিয়েছেন তিনিও।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর