বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুনের ঘটনায় প্রবল সমালোচিত হয়েছে রাজ্য সরকার। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন নারী, সেখানে মহিলারা কতখানি সুরক্ষিত? ইতিমধ্যেই এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এবার এই নিয়ে বাংলা হান্টের সামনে মুখ খুললেন তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya)। আরজি কর কাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা থেকে নির্যাতিতার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে চাওয়া, সব কিছু নিয়েই কথা বলেন তিনি।
আরজি কর কাণ্ডে কী কী বললেন দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya)?
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের পুলিশমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর কাণ্ডে তাঁর ভূমিকা নিয়ে বলতে গিয়ে দেবাংশু বলেন, তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুনের ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম গ্রেফতারি করে কলকাতা পুলিশ। এরপর সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার (RG Kar Case) তুলে দেওয়ার পর প্রায় সপ্তাহখানেক কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
শুধু তাই নয়, বর্তমানে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে বাংলার মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেছেন, মা-বোনেদের এই লড়াইকে তিনি স্যালুট করেন। দমনপীড়ন নয়! আরজি কর কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশমন্ত্রী হিসেবে মমতা যে ভূমিকা পালন করেছেন তাকে তিনি স্যালুট করেন বলে জানান দেবাংশু।
আরজি কর কাণ্ডে সমাজমাধ্যমে বেশ সক্রিয় হলেও রাস্তাঘাটে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না তৃণমূলের যুব নেতাকে। দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya) কি জাস্টিস চাইছেন না? প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘জাস্টিস চাওয়ার জন্য রাস্তাঘাটে নামার দরকার কী? আমি তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলে হেঁটেছি। কারণ আমরা জাস্টিস চাই’। দেবাংশু বলেন, আমরা সিবিআইয়ের থেকে জাস্টিস চাই। যত দ্রুত সম্ভব জাস্টিস এবং অপরাধীর ফাঁসি চাই।
দেবাংশু জানান, আরজি করের পাশাপাশি তাঁদের আরও কিছু কাজ করতে হচ্ছে। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন বলে জানান তৃণমূল নেতা। সেখানকার ঘটনা শেয়ার করার পরেই পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আরজি করের ঘটনায় কি কোথাও তৃণমূল যুক্ত? তৃণমূলের কোনও মন্ত্রী যুক্ত? তৃণমূলের কোনও বিধায়ক যুক্ত’? এখানে তৃণমূল (Trinamool Congress), মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়ক কেউ যুক্ত নেই, তাও পদত্যাগ চাওয়া হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধায়ের। এদিকে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই, বলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ’১৪ দিনের মধ্যে…’! TET-এর প্রশ্ন ভুল মামলায় বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের, এক রায়ে তোলপাড়!
কথার সূত্রে ১৪ আগস্টের রাত দখলের কর্মসূচির কথাও উঠে আসে। দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya) বলেন, ওই কর্মসূচিতে তাঁর দিদি, বোন সহ বহু চেনা পরিচিত হেঁটেছেন। ওটা মেয়েদের অধিকার, মেয়েদের সম্মানের দাবিতে প্রতিবাদ ছিল। কিন্তু মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের কর্মসূচির মধ্যে ৩০% সাধারণ সমর্থক এবং বাকি ৭০% সমর্থকের মধ্যে সিপিএমের এবং বিজেপির অনুগামীরা ছিলেন বলে দাবি করেন তৃণমূল নেতা।
কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছিল, আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। এই নিয়ে বিস্তর বিতর্কও হয়েছিল। টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করানো হচ্ছে, এমন অভিযোগও তুলেছিলেন কেউ কেউ। এদিন বাংলা হান্টের মুখোমুখি হয়ে এই সকল অভিযোগ খারিজ করে দেন দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya)।
তৃণমূলের যুব নেতা বলেন, ‘সরকার যে ১০ লক্ষ টাকা দিচ্ছে, সেটা নালসা অ্যাক্টের মধ্যে পড়ে। এটা আদালত এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ঠিক করে দেওয়া টাকা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চাইছেন! না, নালসার অ্যাক্টে স্পষ্ট করে বলা আছে কেউ যদি ধর্ষিতা হয়ে খুন হন, তাহলে তাঁকে সরকারকে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। কারোর উপর অ্যাসিড হামলা হলে নির্দিষ্ট টাকা, কেউ কিডন্যাপ হয়ে খুন হলে নির্দিষ্ট টাকা দেওয়ার চার্ট করা আছে। এটা আদালতের ঠিক করা টাকা। কোনও রাজ্যের ঠিক করা ক্ষতিপূরণের তালিকা নয়। এটা রাজ্য সরকার দিতে বাধ্য। না দিলে আদালত অবমাননার কেস হবে। ফলে যারা বলছেন ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে রাজ্য মুখ বন্ধ করাতে চাইছে তাঁরা ভুল বলছেন’।