বাংলা হান্ট ডেস্ক: কার ভাগ্যে কি আছে তা কেউই বলতে পারে না। আজ যিনি সহায়সম্বলহীন হয়ে রয়েছেন কাল তিনিই হয়তো হয়ে যেতে পারেন বিপুল সম্পদের অধিকারী। শুধু তাই নয়, কিছুজনের জীবনে ভাগ্যের এই চমক এমনভাবে পরিলক্ষিত হয় যা রীতিমতো স্তম্ভিত করে দেয় সবাইকে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এমন একজনের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি দারুণ ভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন সমগ্ৰ বিষয়টি।
একসময়ে অ্যামাজনের (Amazon) ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ শুরু করা এক যুবক তাঁর কষ্ট করে জমানো ৬৬ হাজার টাকা দিয়ে একটি বড়সড় ঝুঁকি নেন। আর সেই ঝুঁকিই কার্যত বদলে ফেলে তাঁর জীবন। মূলত, তিনি তাঁর সমস্ত অর্থ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। আর তার ওপর ভর করেই তিনি ২৮ বছর বয়সে হয়ে উঠেছেন কোটিপতি। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম হল কাইফ ভাট্টি। তিনি ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনের ওয়েস্ট ড্রেটনের বাসিন্দা। এই প্রসঙ্গে কাইফ জানান, স্কুলের শিক্ষকরা সহপাঠীদের সামনে তাঁকে অপমান করতেন এবং নিচু প্রমাণিত করতেন।
২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করার পর, তিনি অ্যামাজনের হয়ে ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ শুরু করেন। দৈনিক প্রায় ১৪ ঘন্টা কাজ করতেন কাইফ। যদিও, এই কাজের মাধ্যমে তিনি কিছুতেই মানসিক শান্তি পাচ্ছিলেন না। বরং, কাইফ বড় কিছু করতে চেয়েছিলেন। আর তারপরই একটি বড় ঝুঁকি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই যুবক। তিনি তাঁর সমস্ত সঞ্চয় ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, “ভার্জ” নামের একটি কয়েনে প্রায় ৬৬ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।
এমতাবস্থায়, খুব দ্রুত ওই কয়েনের দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। এমনকি, ওই বিনিয়োগ থেকেই কাইফ প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা আয় করেন। ঠিক তারপরেই তিনি অ্যামাজনের ডেলিভারি বয়ের চাকরিটি ছেড়ে দেন। এদিকে, ওই বিপুল লাভের প্রসঙ্গে কাইফ জানান, “আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। এত টাকা আমি আগে কখনও দেখিনি।”
পাশাপাশি, কাইফ আরও বলেছেন যে, “এটি একটি দুর্দান্ত অনুভূতি ছিল। আমি আমার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। পাশাপাশি ওই ঘটনা আমাকে ক্রিপ্টো সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করার অনুপ্রেরণা দেয়। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমি আরও টাকা উপার্জন করতে চাই। এই জন্য আমি আমার মনকেও সেভাবে প্রস্তুত করেছি।”
এদিকে, সৌভাগ্যক্রমে, কাইফ তাঁর ঝুঁকি নেওয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর আয়ও বাড়তে থাকে। অ্যামাজন ছাড়ার কয়েক মাস পরে, তিনি প্রায় ৫ কোটি টাকা উপার্জন করেন। এমনকি, এক বছর পরে তাঁর আয় আরও দ্বিগুণ হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, কোটিপতি হওয়ার পর কাইফ দুবাইতে চলে যান। এখন সেখানে তিনি তাঁর স্বপ্নের জীবন যাপন করছেন। জানা গিয়েছে, তিনি সেখানে প্রায় ৪ কোটি টাকায় একটি পেন্টহাউস অ্যাপার্টমেন্ট এবং প্রায় ২ কোটি টাকার একটি মার্সিডিজ জি ওয়াগন গাড়ি কিনেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কাইফের বাবা-মা তাঁর অ্যামাজনের চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে ছিলেন না। কিন্তু কাইফ যখন তাঁর নিজস্ব ভাবনা থেকে ভালো অর্থ উপার্জন শুরু করেন, তখন অভিভাবকদের চিন্তাভাবনা বদলে যায়। এই প্রসঙ্গে কাইফ জানান, “এখন বাবা-মা আমার জন্য গর্বিত। কারণ আমি এই অল্প বয়সেই এত কিছু অর্জন করেছি।”