বাংলা হান্ট ডেস্ক: সীমান্তে বিরোধ, নিষেধাজ্ঞা এবং বয়কটের মতো একাধিক ঘটনা ঘটলেও ভারত এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্যে এতটুকুও ভাঁটা পড়েনি। বরং, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এই দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমান।
একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ১২৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা তার পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় ৪৩.৩ শতাংশ বেশি! একাধিক ইস্যুতে সরগরম থাকা আবহের মধ্যে দুই দেশের এরূপ বাণিজ্যের পরিমান দেখে অবাক হয়েছেন সকলেই।
এমনকি, ভারতের মতো বড় দেশে চিনা দ্রব্য বয়কটের ডাক দিয়েও যে এই পরিমান বাণিজ্য হতে পারে তা ভাবেননি কেউই। WION-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবর অনুসারে, ভারত ও চিনের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমান ২০২১ সালে ১২৫ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড স্তর অতিক্রম করেছে।
ওই ওয়েবসাইট সূত্রে আরও জানা গিয়েছে যে, ভারত ও চিনের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্য ১২৫.৬৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা ২০২০ সালের তুলনায় ৪৩.৩ শতাংশ বেশি। পাশাপাশি, কাস্টমসের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GAC) এবং চিনা সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস দ্বারা প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে ভারতে চিনের রপ্তানি ছিল ৯৭.৫২ বিলিয়ন ডলার, যা ৪৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে, ভারত থেকে চিন ২৮.১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, যা বেড়েছে প্রায় ৩৪.২ শতাংশ হারে।
তবে এর মাঝে ভারত অভিযোগ করেছে যে, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও চিন ভারতীয় কোম্পানিগুলিকে ফার্মাসিউটিক্যালস এবং আইটি-এর মতো খাতে প্রবেশাধিকার দেয়নি। GAC বলছে যে, ভারত ২০২১ সালে চিনের ১৫ তম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই স্পষ্ট বোঝা যায় যে, সীমান্তের ধারাবাহিকভাবে চলা বিরোধ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনেনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারত-চিন বাণিজ্য ২০২০ সালে ৫.৬ শতাংশ কমে ৮৭.৬ বিলিয়ন ডলার হয়ে গিয়েছিল, যা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন ছিল। কিন্তু এখন আবার তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, গত বছরের ৫ মে থেকে প্যাংগং লেক এলাকায় হিংসাত্মক সংঘর্ষের পর ভারত ও চিনের সীমান্তে অচলাবস্থা শুরু হয়। এরপর উভয় দিক থেকে সীমান্তে বিপুল সংখ্যক সেনা ও অস্ত্র মোতায়েন করা হয়। কয়েক দফা আলোচনার পর দুই দেশই কিছু এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হলেও চিনের উস্কানিমূলক তৎপরতা এখনও চলছে। গত ১২ জানুয়ারি অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে ভারত ও চিনের মধ্যে আলোচনা হলেও সেখানে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি।