বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাধারণত প্রযুক্তির উন্নতি বলতেই আমরা বুঝি সবুজের ধ্বংস। একদিকে যত বাড়ছে ইট কাঠ পাথর ততই ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ। এটাই আমাদের সহজ সমীকরণ, তবে এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও কি কাজ করা যায় না? অর্থাৎ একইসাথে পরিবেশকে বাঁচানো এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজের জীবিকা নির্বাহ করা। এরই উত্তর কার্যত খুঁজে দিলেন দুই বন্ধু। সুনীত রেড্ডি এবং সৌর্য চন্দ্র আরেকবার প্রমান করে দিলেন নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করার জন্য সবুজের ধ্বংস যে করতেই হবে এমন কোন কথা নেই।
বছরে আজ প্রায় ১৫ কোটি টাকা রোজগার করেন এই দুই বন্ধু, আবার একইভাবে পরিবেশকেও বাঁচিয়ে চলেছেন তারা। দুজনেই হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা, একদিকে যেমন সুনীত আইআইটি চেন্নাই থেকে ডিগ্রী লাভ করেন, অন্যদিকে তেমনি সৌর্য ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এ ডিগ্রি লাভ করেছেন। দুজনেই কাজ করতেন ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে। কিন্তু তারা ঠিক করেন, তৈরি করবেন নিজেদের স্টার্ট আপ। কারণ সারাদিনের সময় বাধা জীবনে মন ভরছিল না তাদের। পরিবেশের কাছাকাছি যাওয়ার ইচ্ছা তাদের টেনে নিয়ে যায় ন্যাচারাল ফার্মিংয়ের (Farming) দিকে।
প্রায় ১০ বছরের রিসার্চের পর বন্ধু এই আইডিয়া নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। শুরু হয় বি ফরেস্ট নামক এই স্টার্ট আপ। যার লক্ষ্য হল কোনও রকম কীটনাশক ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে ফল সবজি ইত্যাদি তৈরি করা এবং একই সাথে পরিবেশের উন্নয়ন। এই স্টার্টআপে তারা যে কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তার নাম পারমাকালচার। একদিকে যেমন এটি একটি ফসলকে দ্রুত বড় করতে সাহায্য করে, তেমনি অন্য ফসলের বেড়ে ওঠাতেও সাহায্য করে।
সৌর্য বলেন, আমরা যখন কোন জায়গায় কৃষকদের সাথে কথা বলে জমি নিয়ে কাজ করি, তখন সব সময় সেই এলাকার সংস্কৃতি এবং পরিবেশের কথা মাথায় রাখি। একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন সাধারণত আমরা দেখি কৃষি ক্ষেত্রে প্রচুর কীটনাশক এবং রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। আমরা তখনই চিন্তা করেছিলাম এমন কোন উপায় আছে কি যাতে জঙ্গলে যেভাবে প্রাকৃতিক ফলন ঘটে, তাকেই বড় আকারে ব্যবহার করা যায়। আর সেই থেকেই এই আইডিয়া আমাদের মাথায় আসে।
২০০ জনেরও বেশি কৃষক এবং শ্রমিক এখন কাজ করেন এই স্টার্টআপে। ফল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সবজি সবই উৎপাদন করে এই বি ফরেস্ট। একইসঙ্গে যেমন রোজগার হয় আবার তেমনি পরিবেশ রক্ষাতেও বড় বার্তা দিচ্ছেন এই দুই বন্ধু।