বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাক্ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে রাষ্ট্র। সেই কারণেই মুক্তচিন্তা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের বাধার প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন পড়ুয়ারা। ফলে, ভাষা দিবসের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Dhaka University) চারুকলা অনুষদের পড়ুয়াদের পক্ষ থেকেই টিএসসিতে স্থাপন করা হয়েছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) একটি ভাস্কর্য। এবার গত মঙ্গলবার দিন ‘গুম’ হয়ে যাওয়া এই প্রতিবাদী ভাস্কর্যর হদিশ মিলল আবর্জনায়।
এখন, বিষয় হল ঠিক কী কারণে বাক্ স্বাধীনতার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হল ওপার বাংলায় ? জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে (Bangladesh) যে অমর একুশে বইমেলা চলছে সেই মেলাতেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে লেখিকা জান্নাতুন নাঈম প্রীতির বই ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’। শুধু তাই নয়, ‘অমর একুশে বইমেলা’তে এবার আদর্শ প্রকাশনীও স্টল পায়নি। এছাড়াও পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকির ‘শনিবার বিকেল’ নামের ছবিটিকে ঘিরেও বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এমনকি, ছবি মুক্তি নিয়েও সেন্সর বোর্ডের তরফে আপত্তি জানানো হয়েছে।
সব মিলিয়েই, ওপার বাংলার বুদ্ধিজীবীদের কথায়, শিল্পীদের শিল্পস্বত্ত্বায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তারই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তৈরি হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের এই ভাস্কর্য। জানানো হয়েছিল, রাজু ভাস্কর্যের পাশে গোটা ফেব্রুয়ারি জুড়েই এই মূর্তিটি রাখা থাকবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাড়ে ১৯ ফুট উচ্চতার রবীন্দ্রনাথের মূর্তিটি বাঁশ, থার্মোকল আর বইয়ের কাগজ দিয়ে তৈরি। সে মূর্তির মুখ বন্ধ নীল রঙের টেপ দিয়ে, হাতে ধরা ছিল গীতাঞ্জলি গ্রন্থে গেঁথে রাখা লাল পেরেক আর সেখান থেকে গড়াচ্ছে রক্ত।
এদিকে মঙ্গলবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি ‘চুরি’র ঘটনা জানাজানি হতেই প্রতিবাদ করেছিলেন পড়ুয়ারা। ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ’ লেখা একটি কাপড় মূর্তির স্থানে টাঙিয়ে দিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। অভিযোগ ওঠে, কাউকে কিছু না জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গোপনে অপসারণ করে। তবে সেই কথায় প্রাথমিকভাবে সায় দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মূর্তিটি অপসারণের কথাটি স্বীকার করে নেয়। বিষয়টিকে নিয়ে দুই বাংলাতেই চর্চা শুরু হয়।
তবে সেই ভাস্কর্য কোথায় রাখা হয়েছে, সেই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে অবশেষে মূর্তিটির মাথার সন্ধান মেলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন টিএসসি গেটের কাছে সেন্ট্রাল লাইব্রেবির ঠিক উল্টোপাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভিতরে আবর্জনার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিটির মাথা পাওয়া গিয়েছে। পড়ুয়ারাই সেই মূর্তিটি খুঁজে পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে বাকি মূর্তিটি কোথায়, সেই নিয়ে কোনও তথ্য মেলেনি।