বাংলাহান্ট ডেস্ক: এই মুহূর্তে বলিউডের সর্বাধিক জনপ্রিয় ও সফল নাচের কোরিওগ্রাফারদের মধ্যে একজন ধর্মেশ স্যার। পুরো নাম ধর্মেশ ইয়েলান্দে (dharmesh yelande) হলেও ইন্ডাস্ট্রিতে সকলেই তাঁকে ধর্মেশ স্যার নামেই এক ডাকে চেনে। রিয়েলিটি শোয়ের হাত ধরে জনপ্রিয়তায় উঠেছিলেন। এখন সেই সব রিয়েলিটি শোয়েরই বিচারকের আসনে দেখা যায় তাঁকে। শুধু কি তাই? ইতিমধ্যেই কয়েকটি ছবিতেও অভিনয় করে ফেলেছেন তিনি।
শুরুটা সহজ ছিল না একেবারেই। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ধর্মেশ। একটি চায়ের দোকানের আয়ের উপরে নির্ভর করে তাঁদের সংসার চলত। পঞ্চাশ ষাট টাকা দৈনিক আয়ে চারজন মানুষের কষ্ট করেই জীবন অতিবাহিত হত। কিন্তু সন্তানদের পড়াশোনা ছাড়াতে চাননি ধর্মেশের বাবা।
ধর্মেশের অবশ্য বরাবরই নাচের দিকে টান। নাচের ক্লাসে ভর্তিও হয়েছিলেন ছোট বেলায়। কিন্তু নাচই ধ্যানজ্ঞান হওয়ায় কলেজের প্রথম বছরেই পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয় ধর্মেশকে। পিওনের কাজ ধরেন তিনি। পাশাপাশি ছোট ছেলে মেয়েদের নাচও শেখাতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে নিজের যোগ্য পেশা খুঁজে পান ধর্মেশ। বলিউডি ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসাবে কাজ শুরু করেন তিনি।
সেখান থেকেই একটি নাচের রিয়েলিটি শোতে অংশ নেন ধর্মেশ। প্রতিযোগিতা জিতে ৫ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন তিনি। সেই টাকা দিয়ে বাবার সমস্ত ধার শোধ করেছিলেন। কিন্তু এরপরেই বড় ভুল করে বসেন ধর্মেশ। সাফল্য পেয়ে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্নে মুম্বইয়ে থাকতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু কেউ সুযোগ দেয়নি তাঁকে। ব্যর্থ মনোরথে বাড়ি ফেরেন ধর্মেশ।
মাস খানেক পরে ডান্স ইন্ডিয়া ডান্সে অংশ নেন তিনি। এখান থেকেই তাঁর ভাগ্য পরিবর্তনের শুরু। প্রতিযোগিতা জিততে তিনি পারেননি ঠিকই, কিন্তু জনপ্রিয়তার চূড়ায় উঠেছিলেন ধর্মেশ স্যার। তারপর একে একে ছবিতে কোরিওগ্রাফির সুযোগ, রিয়েলিটি শোয়ের বিচারক হওয়ার পাশাপাশি রেমো ডিসুজার ছবিতেও অভিনয় করেন ধর্মেশ।
এখন তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৮ কোটি টাকা। রয়েছে নিজের বাড়ি গাড়ি। তবুও ধর্মেশের বাবা এখনো চায়ের দোকান চালান। এক সময় ওই চায়ের দোকানই তাঁদের সংসার টেনেছে। আজ এত সচ্ছ্বলতা যাতে মাথা না ঘুরিয়ে দেয় সে জন্যই এখনো নিজের শিকড়ের সঙ্গে জুড়ে থাকেন তিনি। ছেলেকেও সেই শিক্ষাতেই শিক্ষিত করছেন ধর্মেশের বাবা।