বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকেই রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম। কারণ লড়াইয়ে একদিকে যেমন ছিলেন বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তেমনি অন্যদিকে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। যার জেরে শুরু থেকেই বাদ বিবাদ চরমে উঠেছিল। এমনকি কাঁথিতে দাঁড়িয়ে বেনজিরভাবে অধিকারী পরিবারকে আক্রমণ করতেও দেখা গিয়েছিল অভিষেক ব্যানার্জিকে। যা নিয়ে যথেষ্ট জল ঘোলা হয় রাজ্য রাজনীতিতে। এবার ফের একবার কাঁথিতে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমস্যায় পড়লেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যুবনেতা সুদীপ রাহা। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হলেন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারি।
বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল জেলায় জেলায়। একইভাবে মেদিনীপুরে কাঁথির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রভাত কুমার কলেজেও আয়োজিত হয় রক্তদান শিবির এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান। এই কলেজের পাশেই ‘শান্তি কুঞ্জ’, অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারীদের বাড়ি। সে কথা মাথায় রেখে এদিন শুরু থেকেই নিজের বক্তৃতায় অধিকারী পরিবারের উপর তীব্র কটাক্ষ উগরে দেন ছাত্রনেতা সুদীপ রাহা। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মা মাতঙ্গিনীকে অসমের মেয়ে বলে অভিহিত করেছিলে, তখন কত বার লজ্জিত হয়ে কান ধরে ওঠবস করেছেন জেলার ভূমিপুত্র? এমন জননেতা যে ৩০ জন সিআরপিএফ নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে! নিরাপত্তা ছেড়ে একদিন বিতর্কে বসুন, আমন্ত্রণ রইল।”
শুধু তাই নয় তার মতে ভুতের ভোটে জিতে বিধানসভায় দিয়েছেন শুভেন্দু বাবু। আর তাই তারা এমন আন্দোলন করবেন যাতে এই পরিবার বাড়ির জানালা খুলতেও ভয় পায়। সুদীপ বলেন, “ভূতের ভোটে জিতে বিধানসভাতে গেছেন শুভেন্দু বাবু। আগামী দিনে এমন আন্দোলন করব তাতে যেন পাশের এই পরিবারের বাড়ির জানলা খুলতে ভয় পাবে।” তার এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই এবার সরগরম হয়ে উঠল রাজ্য রাজনীতি। শুভেন্দু অধিকারীর ভাই তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারির অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও মাইকের ভলিউম কমাননি ছাত্রপরিষদের যুব নেতারা। অথচ তাদের বাড়িতে একজন বৃদ্ধ মানুষ রয়েছেন। আর এই ঘটনায় উস্কানি দিয়েছে সুদীপ। আর সেই কারণেই থানার দ্বারস্থ হতে হয়েছে তাকে।
কাঁথি থানায় অভিযোগ করার পর দিব্যেন্দু এ দিন জানান, “ন্যূনতম সৌজন্যবোধ নেই ওঁদের! আমাদের বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা রয়েছেন। ছোট মেয়ে রয়েছে, তার অনলাইনে পরীক্ষা চলছে। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ওরা কথা রাখেননি৷ এটা কাঁথির মাটি। ওই ছাত্রনেতাকে বুঝতে হবে। আমরাও বোঝাতে জানি।” কার্যত শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিলেও ভাই দিব্যেন্দু এখনও খাতায়-কলমে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। যেমন তিনি দলবদলও করেননি, তেমনই আবার তৃণমূলের কাজেও তেমন সক্রিয় নন। তাই তার এই অভিযোগ দায়ের নিশ্চয়ই নতুন মাত্রা বয়ে আনবে রাজ্য রাজনীতিতে।