নজর “যকের ধন”-এর দিকে! চিনের মদতে ভারতের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ শুরু শ্রীলঙ্কার? সমুদ্রে এবার আসল লড়াই

   

বাংলা হান্ট ডেস্ক: পড়শি দেশ চিন (China) দীর্ঘদিন ধরেই ভারত মহাসাগরীয় (Indian Ocean) এলাকায় নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে। শুধু তাই নয়, সেই লক্ষ্যেই ভারতের (India) একের পর এক পড়শি দেশকে নিজেদের হাতে রেখে ক্রমশ প্রভাব বাড়ানোর পথে হাঁটছে তারা। সেই লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়েছে বেজিং। মলদ্বীপ (Maldives) থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) প্রতিটি দেশেই নিজেদের জাল বিস্তার করেছে চিন। আর এইভাবেই তারা চাইছে ভারতকে “চাপ”-এ রাখতে। যদিও, ঠিক এই আবহেই এবার শুরু হতে চলেছে নতুন যুদ্ধ। তবে, এই যুদ্ধ আর পাঁচটা লড়াই এর মতো না হলেও ইতিমধ্যেই পরিলক্ষিত হয়েছে তুমুল টক্কর। যেটিকে বলা হচ্ছে “কোবাল্ট ওয়ার”।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারত মহাসাগরে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে নিকিটিন সমুদ্র-পর্বত। আর এই পর্বতেই রয়েছে কোবাল্টের খনি। যেটিকে অনেকেই ভারত মহাসাগরের গুপ্ত “যকের ধন” হিসেবে অভিহিত করেন। আর এই কোবাল্ট ধাতুর খনিকের ঘিরেই এখন চলছে তুমুল প্রতিযোগিতা। উল্লেখ্য যে, সমুদ্রে নিমজ্জিত নিকিটিন পর্বতের ওই কোবাল্টের খনি কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সম্পদের উৎস। সম্প্রতি ভারত সেখান থেকেই কোবাল্ট উত্তোলন করার জন্য ইচ্ছে প্রকাশ করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে নয়া দিল্লি থেকে গত জানুয়ারি মাসে সরকারি আধিকারিকেরা ইন্টারন্যাশানাল সিবেড অথরিটির কাছে এই সংক্রান্ত আবেদন জমা দিয়েছিলেন।

এদিকে, ভারত মহাসাগরের যে অংশে নিকিটিন পর্বত রয়েছে, তা কোনও নির্দিষ্ট দেশের সমুদ্রসীমার মধ্যে পড়ে না। এমতাবস্থায়, ওই অংশের দায়িত্বে রয়েছে ইন্টারন্যাশানাল সিবেড অথরিটি। তাই, সেখানে যেকোনও কাজের ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এদিকে, নিকিটিন পর্বত ভারতীয় সমুদ্রসীমা থেকে খুব একটা দূরে অবস্থিত নয়। এমন পরিস্থিতিতে, কোবাল্ট উত্তোলনের অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা না হলেও বিষয়টিতে বাধা আসছে অন্য দিক থেকে।

Did Sri Lanka start a war against India with the support of China?

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, সেখান থেকে কোবাল্ট উত্তোলনের জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা। দূরত্বের দিক থেকে শ্রীলঙ্কা নিকিটিন পাহাড়ের বেশি কাছে অবস্থিত হওয়ায় তাদের দাবিও জোরালো হয়ে উঠেছে। এদিকে, শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি মলদ্বীপও কোবাল্ট তুলতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু, তাদের কাছে সমুদ্র থেকে ধাতু উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি না থাকায় মলদ্বীপের এই আবেদন হয়তো গ্রাহ্য হবে না। কিন্তু, শ্রীলঙ্কার এই দাবির ক্ষেত্রে অদৃশ্যভাবে ছড়ি ঘোরাচ্ছে চিন। অনুমান করা হচ্ছে যে, কোবাল্ট উত্তোলনের জন্য বেজিং শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আর সেই কারণেই হয়তো কোবাল্ট উত্তোলনের জন্য আবেদন জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

আরও পড়ুন: GST লাগু হওয়ায় মিলেছে লাভ! দাম কমেছে কোন জিনিসগুলির? জানালেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ইন্টারন্যাশানাল সিবেড অথরিটির সদর দপ্তর রয়েছে জামাইকায়। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ভারত, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপের মধ্যে কেউ এই কোবাল্ট উত্তোলনের প্রয়োজনীয় অনুমতি পায়নি। সমস্ত দিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই একটি দেশকে কোবাল্ট উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হবে। এমতাবস্থায়, ভারত মহাসাগরের কোবাল্টের খনি থেকে ভারত যদি নিয়মিত উত্তোলন শুরু করার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র পায়, তাহলে প্রচুর রোজগার করতে পারবে। এছাড়া, বিশ্বব্যাপীও এই ব্যবসায় ভারত এগিয়ে থাকতে পারবে।

আরও পড়ুন: ৬ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছল ভারতের বৈদেশিক সোনার ভান্ডার, দেশে বাড়ল গোল্ড রিজার্ভ

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর