বাংলা হান্ট ডেস্ক: যেকোনো মৃত্যুই হয় অত্যন্ত দুঃখের। এমতাবস্থায়, প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে কার্যত মন খারাপ হংকংয়ের। কারণ, ইতিমধ্যেই সেখানকার মানুষ হারিয়ে ফেলেছেন তাঁদের অন্যতম মনোরঞ্জনের সঙ্গী তথা বন্ধুকে। মূলত, বৃহস্পতিবার সকালে হংকংয়ের ওশান পার্কে বিশ্বের সবথেকে বয়স্ক জায়ান্ট পান্ডার (Giant Panda) মৃত্যু ঘটেছে। আর এই খবর সামনে আসতেই মন খারাপ হয়েছে সকলের।
জানা গিয়েছে, ওই জায়ান্ট পান্ডাটির নাম হল অ্যান অ্যান। প্রচুর মানুষ এই পার্কে ভিড় করতেন তাকে দেখার জন্য। এমনকি, ওই পার্কের অন্যতম মূল আকর্ষণও ছিল সে। এমতাবস্থায়, অ্যান অ্যানের মৃত্যুতে মন খারাপ দর্শকদের। মৃত্যুকালে ওই পাণ্ডার বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর। অর্থাৎ, মানুষের জীবনের সঙ্গে তুলনা করলে যা প্রায় ১০৫ বছরের সমতুল্য। আর এই সুবাদের বিশ্বের সবথেকে বয়স্ক জায়ান্ট পাণ্ডার তকমা পেয়েছিল সে।
সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, অ্যান অ্যান শক্ত খাবার খাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি, দীর্ঘ সময় ধরে, সে শুধুমাত্র জল বা ইলেক্ট্রোলাইটযুক্ত তরল খাবার খেত। পাশাপাশি, তার রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানিয়েছেন যে, মৃত্যুর আগে অত্যন্ত দুর্বল ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে সে। এমতাবস্থায়, তার কষ্ট লাঘবের জন্য কর্মীরা তাঁকে সঠিক চিকিৎসাও দেন।
সকলের পছন্দ ছিল সে: এই প্রসঙ্গে ওশান পার্ক কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে দেওয়া একটি বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, অ্যান অ্যানের মৃত্যু সত্যিই সকলের কাছে খুবই দুঃখজনক। গত ২১ জুলাই, ২০২২ থেকে, তার অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায়, তার অবস্থা সম্পর্কে চিনের সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সাথে পরামর্শ করা হয়। এরপর ওশান পার্কের পশুচিকিৎসকরা এবং কৃষি, মৎস্য ও সংরক্ষণ বিভাগ কঠিন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জানান যে, তাঁরা এই পান্ডাটির “ইচ্ছামৃত্যু” ঘটাবেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা ৪০ মিনিটে তার এনক্লোজারে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে: এই প্রসঙ্গে ওশান পার্ক কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট পাওলো পং জানিয়েছেন, অ্যান, তাঁর পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছিল। স্থানীয়দের সাথে এবং পর্যটকদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল সে। প্রত্যেকের কাছেই তার সুন্দর স্মৃতি রয়েছে। যা তাঁরা কখনই ভুলবেন না।
Hong Kong’s beloved giant panda An An euthanised at Ocean Park https://t.co/QvgKdpXVEx
— South China Morning Post (@SCMPNews) July 21, 2022
এদিকে, অ্যান অ্যান চলে যাওয়ার পর একটি শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কর্মীরা তার একটি ছবিসহ সাদা ফুল রেখেছিলেন এবং ছবিটিতে লেখা ছিল “ধন্যবাদ অ্যান 1986-2022″। পাশাপাশি, স্বাভাবিকভাবেই, এই জনপ্রিয় পান্ডার মৃত্যুর খবর তার অনুরাগীদেরকেও শোকাহত করেছে। বহুজন পার্কে এসে তাকে শ্রদ্ধাও জানান। উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশে জন্ম নেওয়া অ্যান অ্যানকে ১৯৯৯ সালে এখানে নিয়ে আসা হয়। তার সঙ্গীর নাম ছিল জিয়া জিয়া। ২০১৬ সালে সে মারা যায়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৮ বছর।