তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রকে দুষলেন ফিরহাদ, পাল্টা দিলীপ বললেন রাজ্য ৪০ টাকা নিচ্ছে সেটা কমাক

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির জেরে বর্তমানে মারাত্মক সমস্যায় আমজনতা। ইতিমধ্যেই কলকাতায় সেঞ্চুরি পেরিয়েছে পেট্রোল। ৯২ পার করেছে ডিজেলও। যার জেরে পকেট ক্রমশ খালি হচ্ছে সাধারন মানুষের। অন্যদিকে পেট্রোপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় প্রভাব পড়েছে সাধারণ বাজারেও। অগ্নিমূল্য হয়ে উঠেছে প্রয়োজনীয় নিত্যদ্রব্যের দাম। কিন্তু একদিকে যখন পথে-ঘাটে মূল্যবৃদ্ধির মার খাচ্ছে সাধারণ জনতা, তখন রাজনীতিতে চলেছে পরস্পর দোষ চাপানো। কার কতটা দোষের ভাগ কিম্বা করের ভাগ তাই নিয়েই চলেছে তর্ক বিতর্ক।

এদিনও একইভাবে তর্ক বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) এবং রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। একদিকে যেমন ফিরহাদের দাবি, ” রিল্যায়ান্স, ভারত পেট্রোলিয়ম তেল বেচে। এই তেলকে ফ্রি ট্রেড করে দেওয়া হয়েছে। তার সুবিধা তেল কোম্পানির মুনাফা বাড়বে। শেয়ারের দাম বাড়বে। সেই শেয়ার কিনবে বিদেশিরা। এটা মেড ইন ইন্ডিয়া নয় সেলিং ইন্ডিয়া।”

তেমনি পাল্টা দিলীপ ঘোষ বলেন, “তেল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বিপণনকারী সংস্থা গুলি দাম ঠিক করে। রাজ্য সরকার সেস ও কর কমাক। রাজ্য প্রতি লিটারে ৪০ টাকা করে নিচ্ছে। ২০-২২ টাকা পাচ্ছে কেন্দ্র। নিজেদের অংশ কমিয়ে দিক।” তিনি আরও বলেন, তেলের দাম আগেও বেড়েছে। এখনও বাড়ছে। হ্যাঁ এবার একটু বেশি বেড়েছে। তার মতে, রাজ্য সরকার সেস এবং কর কমালেই অনেকটা সুরাহা পাবে জনতা।

অন্যদিকে ফিরহাদের দাবি, রাজ্য সরকারের কর তো ঠিক করে দেয় কেন্দ্র। করের বেশিরভাগ অংশ কে নিচ্ছে? কেন্দ্র। সেস কে নিচ্ছে? কেন্দ্র। অপরিশোধিত তেলের মূল্য থেকে বেশি দাম বাড়িয়েছে তেল কোম্পানিগুলি এমনটাও দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে দিলীপের মতে, বিধানসভার ভেতরে ও বাইরে আন্দোলন করছেন তারা। আর তাদের দেখেই অনুসরণ করে কিছু করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শনিবার থেকে পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে তৃণমূল, এদিন এই ঘটনাকেই কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

fuel prices coronavirus effect petrol and diesel prices not changed 730X365

শুধু তাই নয় তিনি এও বলেন, রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলে তেলের দাম কমবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমলে তবেই কমবে। তার মতে, আন্দোলন করতে চাইলে ভুয়ো টিকাকরন এবং ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে করা উচিত। এর পাল্টা দিয়েছেন ফিরহাদও। তার দাবি, মোদী সরকারের পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে যেদিন প্রতিবাদ করতে পারবে রাজ্য বিজেপি, সেদিন দিলীপ ঘোষকে স্যালুট করবেন তিনি। সাথে সাথেই জাল টিকাকরণ কান্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভুয়ো টিকাকরণের জেরে তো গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার তদন্ত চলছে, আদালতেও ঠিকঠাকভাবে বিচার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে। কিন্তু তেল কেলেঙ্কারিতে কাকে গ্রেপ্তার করা হবে?

সব মিলিয়ে শাসক বিরোধী দল যখন একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ব্যস্ত, বাজারে মরছেন সাধারণ মানুষ। পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং তথাকথিত মূল্যবৃদ্ধির মার থেকে এই মহামারীর পরিস্থিতিতে মুক্তির প্রায় কোনো পথই দেখতে পাচ্ছেন না তারা।


 

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর