বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শহরে একের পর এক টাকার পাহাড়ের হদিস। বৃহস্পতিবার কাকভোরে কয়লাকাণ্ডে (Coal Scam) বালিগঞ্জের (Ballygunge) গরচায় একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি (ED)। কিছুটা যোগ মিলেছে শাসকদলের নেতারও। এরপরেই এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে একহাত নিলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
গোটা শাসকদলকে কটাক্ষ করে বঙ্গ বিজেপির অন্যতম প্রধান সৈনিক দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস মানেই দুর্নীতি। কলকাতায় টাকার পাহাড়, এদিকে ভুখা পেটে মরছে বাংলার মানুষ। ..কয়লা চোরাচালানের কাজে এই টাকা ব্যবহার করা হচ্ছিল। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলে পিসি ভাইপো সবার নাম উঠে আসবে।’ দিলীপবাবুর এই মন্তব্য ঘিরেই শোরগোল রাজনৈতিক মহলে।
Heaps of filthy money recovered in Kolkata's Ballygunge amounting to over Rs.1 cr at a time where the people of Paschim Banga are starving.
This money was used to smuggle coal. With proper investigation, the names of Aunt and Nephew will come up. pic.twitter.com/FqpCFVOel5
— Dilip Ghosh (@DilipGhoshBJP) February 9, 2023
প্রসঙ্গত, গতকাল বালিগঞ্জের গরচায় ওই নির্মাণ সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে এক কোটিরও বেশি টাকা উদ্ধার করে ইডি। প্রায় দশ ঘন্টা ধরে ধরে তল্লাশি অভিযান বিশেষ চালিয়ে এই বিপুল টাকা ইডি-র আধিকারিকদের নাগালে আসে। ইডি সূত্রে দাবি, এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মনজিৎ সিং গেরেওয়ালের মাধ্যমে এই মোটা অংকের কালো টাকা সাদা করছিলেন।
ইডি সূত্রে খবর, তাঁদের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল, কয়লা পাচারের কালো টাকা এই নির্মাণ সংস্থার মাধ্যমে সাদা করা হচ্ছে। সেইমত তল্লাশি চলার পরই হাতে আসে বিপুর পরিমান টাকা। নগদ টাকার পাশপাশি উদ্ধার করা হয়েছে ডিজিটাল এভিডেন্স এবং নথি। সংশ্লিষ্ট সংস্থা সূত্রেই দাবি, ওই কালো টাকা দিয়ে এলাকায় একটি গেস্টহাউস কেনার চেষ্টা করেন মনজিৎ সিং গ্রেওয়াল। যার বাজার মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা।
গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কথায় ওই গেস্টহাউসটি কেনা হয়। পাশাপাশি প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর কালো টাকাও তিনি সামলাতেন বলে সূত্রের খবর। এদিন দুপুরেই ইডির তরফে প্রকাশিত এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সম্পত্তি বিক্রির টাকার কিছু অংশ রাখা হয়েছিল গজরাজ গ্রুপের দফতরে।
জানা গিয়েছে গেস্ট হাউজটি কেনেন এই গজরাজ গ্রুপের কর্ণধার বিক্রম শিকারিয়ার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মনজিৎ গ্রেওয়াল। তদন্তকারীদের দাবি এই দুই ব্যক্তি রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। সেই প্রভাবশালীর কয়লাপাচারের কালো টাকা সাদা করতেই সাহায্য করছিলেন তারা। তদন্তে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর নথি ও ভিডিয়োও তাদের হাতে এসেছে বলে দাবি গোয়েন্দা সংস্থার।
তদন্তে জানা গিয়েছে, গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টর বিক্রম শিকারিয়া রিয়েল এস্টেট, ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট সহ প্রায় ৩০টি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। যেখানে কোনও সংস্থার ডিরেক্টর পদে তিনি, আবার কোনও সংস্থার অতিরিক্ত ডিরেক্টর পদেও রয়েছে তার নাম। বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচারের পর, এবার কয়লাকাণ্ড। আর তাতেও মিলল কুবেরের ধনের হদিস। যা নিয়ে শোরগোল বঙ্গ জুড়ে।