বাংলাহান্ট ডেস্কঃ টালমাটাল পরিস্থিতি বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। একদিকে দলে ভাঙন অন্যদিকে পুরভোটের মুখে দলের প্রতিপত্তি তলানিতে এসে ঠেকা, সব মিলিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির। এবার সমস্ত দায় নতুন রাজ্য কমিটির দিকে ঠেলে সটান সংঘ প্রধান মোহন ভাগবতকেই নালিশ ঠুকলেন দিলীপ ঘোষ।
সম্প্রতি মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি অভিযোগ তোলেন রাজ্য কমিটিতে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে বলেই। তাঁর দাবি অভিজ্ঞতার অভাবেই তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়ছে বিজেপির সংগঠন। তিনি আরও বলেন, আন্দোলন গড়ে তোলার বা সংগঠন সাজানোর মত কোনো অভিজ্ঞতাই বর্তমান রাজ্য কমিটির সদস্যদের নেই।
বিগত কিছুদিন যাবৎ ভাঙন ধরেছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। দলের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীকে নিয়ে ক্ষুব্ধ দলের তাবড় নেতাদের একাংশ। কেউ কেউ আবার বিরোধীতা করেছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারেরও। এরই মধ্যে অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরোধীতা করে মুখ খুলতে দেখা যায় জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারির মতন নেতাদেরও। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সাময়িক ভাবে দল থেকে বরখাস্ত করা হয় তাঁদের। বিক্ষুদ্ধ নেতাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুরও।
অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়েও গুঞ্জন রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল এবং বিজেপির উভয় দলেরই নেতাদের একাংশের দাবি বিজেপিতে আর থাকা সম্ভব হচ্ছে না শুভেন্দুর। ফলে প্রকট হচ্ছে তাঁর দল ছাড়ার গুঞ্জনও।
পুরভোটের আগেই দল ছেড়েছেন একাধিক নেতা। জেলাস্তরের অগণিত নেতা যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। চার পুরনিগমের ভোটের ফলাফলে কার্যতই সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছে বিজেপি। মাত্র কয়েকটি ওয়ার্ড ছাড়া তাদের হাতে আসেনি কিছুই। এমনকি ১০৮টি পুরসভার ভোটের অধিকাংশতেই প্রার্থী দিতে পারেনি দল। উত্তরবঙ্গে পায়ের নীচের মাটি কিছুটা শক্ত করা গেলেও বর্তমানে ধস নামছে সেখানেও। এহেন অবস্থায় ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কার্যতই চিন্তার ভাঁজ শীর্ষ নেতাদের কপালে। বিজেপির অবস্থা যে সত্যিই শোচনীয় মোহন ভাগবতের কাছে দিলীপের এই নালিশই প্রমাণ দেয় তার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যে ভাঙনের মুখে আরএসএসও। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে আরএসএস এর ৮০০ টি শাখা বন্ধ হয়েছে বলেই খবর। কলকাতায় এসে এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোহন ভাগবত। এহেন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইতে কী হবে বিজেপির মাস্টারস্ট্রোক? নাকি সবুজের অভিযানে ঘাসফুলে ঢাকা পড়বে পদ্ম? সেই প্রশ্নের উত্তরের দিকেই তাকিয়ে এখন রাজ্যবাসী।