রাজ্যের হাতে নয়, সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দিক কেন্দ্র! দাবি দিলীপ ঘোষের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ইতিমধ্যেই ইয়াসে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলা। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে লক্ষ লক্ষ মানুষ হয়ে পড়েছেন গৃহহীন। ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবন এলাকায়। গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ভেঙে গিয়েছে ১২৪ টিরও বেশী বাঁধ। প্রায় ৩ লক্ষ ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় এক কোটি মানুষ। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষয়ক্ষতির এই তালিকা নিয়েই উঠল প্রশ্ন। গতবছর আমফানের পর ত্রাণ চুরির অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। এবারও ফের একবার সরব হলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

তার মতে, ক্ষয়ক্ষতির এই তালিকা কি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল রাজ্য সরকার? যে তালিকা মমতা সরকার দিয়েছেন তার কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি এমনটাও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, “গতকাল মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ১৩৪টি বাঁধ ভেঙে গিয়েছে, আমি জানি না সেই তালিকা আছে কি না। কীসের ভিত্তিতে বলেছেন, কোথা থেকে খবর পেলেন, তার কোনও সূত্র আমরা পাইনি। আয়লার সময় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র রাজ্য সরকারকে দিতে চেয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী নেত্রী হিসাবে কেন্দ্রকে সেই টাকা দিতে মানা করেছিলেন। কিন্তু আমরা বারণ করছি না, আমরা চাই কেন্দ্র টাকা দিক। তালিকার ভিত্তিতে পারলে সোজাসুজি ক্ষতিগ্রস্তদের দিক। কারা কারা সাহায্য পেল তার তালিকা যেন ব্লক অফিসে বা পঞ্চায়েত অফিসে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।তাতে যারা সত্যিকারের ক্ষতিগ্রস্ত তারাই টাকা পাবেন। কারও নাম বাদ গেলে তিনি আবেদন করতে পারবেন। সরকার এটা না হলে স্বচ্ছতা থাকবে না।”

ইয়াসে যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবন অঞ্চলে। ভেঙে পড়েছে একাধিক গাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। গোসাবা, সাগর, কাকদ্বীপ প্রভৃতি অঞ্চলেও রীতিমতো সমস্যায় রয়েছেন মানুষ। সুন্দরবনের সমস্যা সম্পর্কে মুখ খুলতে গিয়ে ফের একবার মমতা সরকারকে দুষলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ” সুন্দরবনের এই যে বিভীষিকা বছর বছর ঘটছে, তার একটা বড় কারণ হল ম্যানগ্রোভ গাছের জঙ্গল কেটে ভেরি বানাচ্ছে সরকার। সরকারি এমএলএ বানিয়ে তাদের প্রচ্ছন্ন মদতে এই কাজ হচ্ছে।” তিনি আরো জানান, যেকোনো রেস্ট্রিক্টেড এলাকা সেখানেও জেসিডি দিয়ে মাটি খুঁড়ে ভেড়ি বানানো হচ্ছে। তার অভিযোগ, আয়লার সময় যে টাকা এসেছিল তাতে কংক্রিটের ব্রিজ বানানোর কথা। তৎকালীন সেচ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় একটু চেষ্টাও করেছিলেন। সে তো সেই কারণেই হয়তো তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে তারপরে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রীরা আর কোন কাজ করেনি।

তিনি আজ স্পষ্টতই বুঝিয়ে দেন, কেন্দ্র সরকারের তরফে সাহায্যদানের বিরোধিতা তারা করছেন না।তাদের দাবি সঠিক তালিকা তৈরি করা হোক, সাথে সাথে যিনি প্রকৃত যোগ্য, তিনি যেন সেই টাকা পান। শুক্রবার রাজ্যে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন এ বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর