বাংলা হান্ট ডেস্ক: চিরনিদ্রায় কেকে। ইতিমধ্যেই কলকাতার নজরুল মঞ্চে তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। এরই মধ্যে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুকে ঘিরে। তিনি বলেন, ‘কেকে-কে চক্রান্ত করে মেরে ফেলা হয়েছে।’ নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণের পর অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ ঘোষ। স্বাভাবিকভাবেই কেকে-র মৃত্যু প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়। তখনই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কেকে-কে চক্রান্ত করে মেরে ফেলা হয়েছে। এটা দুর্ঘটনা নয়, হত্যা।’ এমনকি প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীকে রাজ্যের তরফ থেকে গান স্যালুট দেওয়া প্রসঙ্গেও দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘অপরাধ বোধ থেকেই গান স্যালুট দেওয়া হয়েছে।’
নিজের যুক্তির স্বপক্ষে তিনি বলেন, ‘অমিত শাহ বলেছিলেন, বাঙ্গাল মে যাওগে তো মারে যাওগে। আজ বাংলায় এসে লোকটা বেঘোরে মরে গেল।’ দিলীপের অভিযোগ, ‘এটা কলেজের প্রোগ্রাম ছিল না। তৃণমূল পার্টির প্রোগ্রাম ছিল। ওরা লোক জড়ো করেছে। নেতারা অর্গানাইজ করেছে। ওকে দিয়ে জোর করে একের পর এক গান গাইয়েছে। উনি পারছিলেন না। বার বার চলে যেতে চাইছিলেন। ওঁকে চক্রান্ত করে মেরে ফেলা হলে
দিলীপের কথায়, ‘এটা হত্যা। এটা থেকে যে অপরাধ বোধ তৈরি হয়েছে , তা ঢাকা দিতেই এই গান স্যালুট।’ প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রসদনে গান স্যালুট দিয়ে কেকে-কে শেষ বিদায় জানানো হয়। সেখান থেকে তাঁর কফিনবন্দি দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা বিমানবন্দরে। বিকেল ৫ টায় বিশেষ বিমানে তাঁর নিথর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইতে। সেখানেই হবে ওঁর শেষকৃত্য।
দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন সরকারের উদাসীনতা নিয়েও। তাঁর প্রশ্ন, ‘অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হল কেন? কেকে তো নিজে ঠিক করবেন না। তখন উনি অসুস্থ। বাকিরা কী করছিল? কার দায়িত্ব ছিল? উনি অসুস্থ বোধ করছেন, আর পাশে থাকা লোকজন চিৎকার করছে, সেলফি তুলতে আসছে।’ দিলীপের কথায়, ‘একটা বদ্ধ জায়গায় ঘণ্টার পর ঘন্টা গান করানো হয়েছে। উল্লাস করা হয়েছে ।’ এই ঘটনাকে অতি অমানবিক বলেছেন তিনি। ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত বলেও দাবি তুলেছেন বিজেপি নেতা।
দিলীপ ঘোষের এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এত জনের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলেন না। পেশাদার শিল্পী পারফর্ম করে বেরিয়ে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়েছেন। এটা নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল কুৎসা করছে। এটা ওদের রাজনৈতিক দেউলিয়া হওয়ার উদাহরণ। মুখ্যমন্ত্রী পূর্ণ সম্মান দিয়েই শিল্পীকে শেষ বিদায়ের ব্যবস্থা করেছেন।’
কেকে-র মৃত্যু অবশ্য অনেকগুলি প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেছে অজস্র প্রশ্ন। কেন দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল না শিল্পীকে? অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের অদূরদর্শিতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তবে বিজেপি নেতৃত্ব এক্ষেত্রে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন বাংলার প্রশাসনকেই।