বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুদিন যাবৎ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) সম্পর্কের সমীকরণ পাল্টেছে। মুখ ফুটে কেও না বললেও বঙ্গ বিজেপির অন্যতম প্রধান দুই সৈনিকের মধ্যেকার তিক্ততা যে ক্রমশ্যই বৃদ্ধি পাচ্ছিলো তা বোঝার অবকাশ রাখে না। তবে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বঙ্গ সফরের পর পরিস্থিতি কিছুটা হলেও অনুকূলে গেছে তা চোখে পড়ছে সকলের। রবিবারের সকালে নিউটাউনের প্রাতঃভ্রমণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পরে আসানসোল ঘটনা (Asansol Issue ) প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “এতো জায়গায় কম্বল দেওয়া হয়। কিছু ঘটেনা। এখানে হল। রহস্য থাকতে পারে। অনেকে চীৎকার করছেন। তদন্ত করে দেখা উচিৎ।”
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে বুধবার আসানসোলের শিবসেবা কম্বল বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেখানে তিনি কয়েকজনের হাতে কম্বল তুলে দিয়ে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যান। অন্যদিকে দলনেতার চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরই কম্বল দানকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। হঠাৎই সেই হুড়োহুড়ি রূপ নেয় মৃত্যুর। ঘটনাস্থলে পদপিষ্ট হয়ে এক শিশু-সহ তিন জনের মৃত্যু ঘটে। এরপরেই শাসক দলের অভিযোগের তীর যায় বিরোধী দলনেতার ওপর। তাঁর গ্রেফতারের দাবিতেও সরব হন তৃণমূলের অধিকাংশ। শুধু তাই নয়, এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিঁনিও শুভেন্দুর দিকে অভিযোগ উঠিয়ে বলেন, “দান খয়রাতি মানবতার অপমান। কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মানুষকে টেনে আনা আমি সমর্থন করি না। গরীবকে সাহায্য করার অন্য নানারকম উপায় আছে। আরও সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল। দায় শুভেন্দুরও।”
এরপরই রাজনীতির অন্দরে শুরু হয় জল্পনা। স্বাভাবিকভাবেই সকলের মনে প্রশ্ন ওঠে হঠাৎ দিলীপ শুভেন্দুর বিপরীত অবস্থানে কেন কথা বলছেন? রাজ্য বিজেপির অন্দরে কী তবে ফাটল ধরেছে? এমন প্রশ্নও উঠে আসে বিভিন্ন মহল থেকে।
তবে এদিন এসব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে দিলীপ ঘোষ বলেন, “আপনারা আপনাদের প্রয়োজন মতো এই তরজা বাড়ান কমান। আমরা একই পার্টি। একই আদর্শ। নিজের কথা যে যার নিজের মতো বলেন।”
উল্লেখ্যে শুক্রবার রাতেই দুদিনের বঙ্গ সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। দলের নেতাদের সাথে একান্ত বৈঠকেও অংশগ্রহণ করেন তিঁনি। এরপরই কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান নিয়ে একেবারেই ভিন্ন সুর শোনা গেল দিলীপের গলায়। তবে কী শাহ ম্যাজিক? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অমিত টনিকেই রাতারাতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে এসেছে এই আমূল পরিবর্তন।