বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কখনো রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ করা হোক, তো আবার কোনো সময়ে নিজের দলের বিরুদ্ধেই সুর চড়ানো, সর্বদাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বিগত কয়েকদিনে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে ফের খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন বিজেপির (Bharatiya Janata Party) সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। সম্প্রতি সিবিআইকে (CBI) তুলোধোনা করেন বিজেপি নেতা। সেই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) পাশাপাশি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ। তবে সে সকল বিতর্ককে পাত্তা না দিয়ে ফের একবার বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন দিলীপবাবু। দলের সংগঠনকে নিয়ে মন্তব্য করার পাশাপাশি কলকাতাবাসীর উদ্দেশ্যেও এদিন আক্রমণ শানান বিজেপি নেতা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলার বুকে একের পর এক দুর্নীতি মামলা উঠে আসায় জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস। এসএসসি, টেট থেকে শুরু করে গরু পাচার এবং কয়লা পাচার মামলায় একের পর এক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের নাম জড়িয়েছে। তবে এর মাঝেই গতকাল আবার দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সকল প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে দিন দিলীপবাবু বলেন, “কলকাতার মানুষ কখনোই দুর্নীতি নিয়ে বিশেষ ভাবে না। গোটা রাজ্যে প্রতিবাদ চললেও কলকাতায় কোনো প্রতিবাদ দেখেছেন? আসলে এখানকার মানুষ শুধুমাত্র নিজেদের সুবিধার কথাটাই ভাবে। বিজেপি কবে কলকাতা সিট পেয়েছে? আসলে যদি আমার সত্য কথার জন্য কারো খারাপ লাগে, তবে কিছু করার নেই।”
বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করার পাশাপাশি কলকাতাবাসীর উদ্দেশ্যেও এদিন কটাক্ষ ছুড়ে দেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “যদি কারোর ক্ষমতা থাকে, তবে বিজেপিকে কলকাতায় জিতিয়ে দেখাক। আসলে কলকাতার মানুষ ভাবে, সে আনন্দে থাকবে। কালীঘাটের কাছাকাছি থাকবে। এতে যদি ভিখারি হতে হয়, তবে কোনো অসুবিধা নেই। পুজোর টাকা পেলেই বর্তমানে সবাই খুশি।” তাঁর এই মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
তবে এ প্রথম নয়, এর আগেও সিবিআই ও ইডি নিয়ে দিলীপের মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়। সম্প্রতি তিনি বলেন, “তৃণমূল সরকারের সঙ্গে সিবিআইয়ের সেটিং হয়ে গিয়েছে, এটা বুঝতে পেরেই বর্তমানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীক দ্বারা ইডিকে পাঠানো হয়েছে। সিবিআইয়ের কোনো কোনো অফিসার রাজ্যে শাসক দলের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কেউ কোটি টাকা পেয়েছে, আবার কেউ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই জন্যই বর্তমানে ইডিকে তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে যারা সেটিং করেছিল, তারা এখন ওদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আসলে এই কুকুরটা পোষ মানবে না, কামড়াবে।” সিবিআইকে নিয়ে দিলীপের প্রশ্ন দেশের রাজনীতিতেও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে তাঁর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর মাঝেই কলকাতা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের এদিনকার বক্তব্য বঙ্গ রাজনীতিতে কি প্রভাব ফেলে, সেটাই দেখার।